নারী ক্রীড়াবিদকে ধর্ষণের অভিযোগে বাংলাদেশ জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম নিউটনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১২। গতকাল শনিবার রাজধানীর শাহ আলী ও মিরপুর এলাকা থেকে নিউটনসহ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। র্যাব জানিয়েছে, নারী জুজুৎসু ক্রীড়াবিদকে ধর্ষণের পর ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বারবার ধর্ষণ করার অভিযোগ রয়েছে বাংলাদেশ জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম নিউটনের বিরুদ্ধে।
র্যাব জানায়, জুজুৎসু এসোসিয়েশনের একজন নারী খেলোয়াড় রফিকুল ইসলাম নিউটনের এর বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন দমন ও পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং র্যাব-১২ এর একটি অভিযানিক দল রাজধানীর শাহ আলী ও মিরপুর এলাকা থেকে এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত ধর্ষণের ঘটনার প্রধান আসামি রফিকুল ইসলাম নিউটন ও তার সহযোগী একজন নারীকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ধর্ষণের সাথে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত রফিক এসোসিয়েশনের গ্রেফতারকৃত অপর এক নারী খেলোয়াড় এর সহায়তায় অন্য নারী খেলোয়াড়দের মিথ্যা প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে যৌন হয়রানি সহ জোর পূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করতো। ভিকটিম বিগত দুই বছর যাবত উক্ত জুজুৎসু এসোসিয়েশনে গ্রেফতারকৃত রফিক এর অধীনে জুজুৎসু খেলার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আসছিলো। খেলার প্রশিক্ষণকালীন সময়ে গ্রেফতারকৃত রফিক বিভিন্ন অজুহাতে ভিকটিমকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করতো। পরবর্তীতে ভিকটিম প্র্যাকটিস শেষে চেঞ্জিং রুমে পোষাক পরিবর্তন করার সময় গ্রেফতারকৃত নারী খেলোয়াড় ভিকটিমকে রুমের মধ্যে আটকে রেখে গ্রেফতারকৃত রফিকুল ইসলামকে ডেকে আনে এবং গ্রেফতারকৃত রফিকুল রুমে প্রবেশ করে ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত নারী খেলোয়াড় রুমে প্রবেশ করে মোবাইল ফোনে ভিকটিমের নগ্ন ছবি ধারণ করে এবং কাউকে জানালে ভিকটিমের নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি প্রদান করে। উক্ত ঘটনার পর গ্রেফতারকৃত রফিকুল ইসলাম ভিকটিমের নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে রাজধানীর একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে একাধিকবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে।
র্যাব সূত্র আরো জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত রফিকুল ইসলাম নিউটন একজন জুজুৎসু খেলার প্রশিক্ষক। পাশাপাশি সে রাজধানীর শ্যামলীতে অবস্থিত বাংলাদেশ জুজুৎসু এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। উক্ত এসোসিয়শনের অধিকাংশ প্রশিক্ষণার্থী নারী। যেখানে অভিভাবক হিসেবে এই কোমলমতি মেয়েদেরকে এগিযে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল। কিন্তু সেই ব্যক্তি কোমলমতি মেয়েদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তার হীন চরিত্র চরিতার্থ করার প্রয়াস চালায়।
গ্রেফতারকৃত রফিকুল এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদকের মত পদে থেকে প্রশিক্ষণার্থীদের ভালো অবস্থানে নিয়ে যাওয়া এবং বিদেশ ভ্রমণের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতনের মতো অপকর্ম করতো বলে জানা যায়। এছাড়াও সে এসোসিয়েশনের অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে খেলোয়ারদের সাথে অনৈতিক কার্যকলাপের কারণে গর্ভবতী হলে তাদের গর্ভপাত করানোর মতো ভয়ংকর কাজও করেছে বলে জানা যায়।
এমনকি সে অনুশীলনের আগে মেয়েদের পোশাক পরিবর্তনের কক্ষে প্রবেশ করে তাদের জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ ও নগ্ন ছবি তুলে রাখতো। পরবর্তীতে ধারণকৃত নগ্ন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় ভীতি দেখিয়ে বø্যাকমেইল করে বারংবার ধর্ষণ করে তার হীন চরিত্র চরিতার্থ করতো বলে জানা যায়।