রাজধানীতে অস্ত্রের মুখে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মামলারভিত্তিতে জানা গেছে, গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় রাজধানীর উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের মোড় থেকে ওই তরুণীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করা হয়। পরে একটি মাইক্রোবাসে (হাইয়েস) তাকে তুলে নিয়ে যান গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনি নামে এক ব্যক্তি। এরপর রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ওই তরুণীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মাইক্রোবাস থেকে নামিয়ে একটি রিকশাযোগে ১২ নম্বর সেক্টরের প্রিয়াংকা সিটির ৬ নম্বর রোডের ৭ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে যান। সেখানে পিস্তলের মুখে জিম্মি করে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয় বড় মনি’র বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে ওই তরুণীর স্বামী ভিডিও কল দেন। কলটি রিসিভ করলে বড় মনি তরুণীকে রেখেই পালিয়ে যান। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯- এ কল করে ওই তরুণী সাহায্য চান। ফোন পেয়ে তুরাগ থানা পুলিশ ওই তরুণীকে রাত ২ টার দিকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যায়।
গতকাল শনিবার বিকালে ওই তরুণী বাদী হয়ে গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনি’র বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনি বর্তমানে টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। মামলার পর ওই তরুণীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে তুরাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ মিয়া বলেন, ‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। ভিকটিম ও তার বাবা অভিযোগ করেছেন, বড় মনি এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তরুণীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।’
তুরাগ থানায় দায়ের করা মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, বড় মনি’র সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় আড়াই মাস আগে। বড় ভাই হিসেবে বিভিন্ন পরামর্শ দিতেন। গত বৃহস্পতিবার থেকে বড় মনির সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ হয়। এরপর হোয়াটসঅ্যাপসের মাধ্যমে কথাবার্তা শুরু হয়। ওইদিনই উত্তরায় তারা দেখা করেন। কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরির পর চলে যান। পরের দিন শুক্রবার রাত সাড়ে ৭ টার দিকে বড় মনির সঙ্গে দেখা করলে তাকে মাইক্রোবাসে উঠতে বলেন। সন্দেহ হওয়ায় গাড়িতে উঠতে না চাইলে পিস্তলের ভয় দেখান। পরে পিস্তলের মুখে জিম্মি করে একটি নির্জন এলাকায় নিয়ে ভয়ভীতি দেখান। এরপর রিকশায় করে উত্তরার প্রিয়াংকা সিটির ৬ নম্বর সড়কের ৭ নম্বর বাড়ির তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে যান। এরপর তাকে ধর্ষণ করেন। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দেন। খবর পেয়ে তুরাগ থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনি’র সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ এপ্রিল রাতে টাঙ্গাইল শহরের এক কিশোরী বাদী হয়ে বড় মনির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।