spot_img

ভালো ব্যাংকের সঙ্গে খারাপ ব্যাংক একীভূত করা হলে তা হবে উদ্বেগের: ড. ফাহমিদা খাতুন

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, ভালো ব্যাংকের সঙ্গে খারাপ ব্যাংক একীভূত করা হলে তা হবে উদ্বেগের। কেননা, অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে একটি ব্যাংক ভালো অবস্থায় গেছে। সেখানে খারাপ একটি ব্যাংক মিলিয়ে দিলে তার উচ্চ খেলাপি ঋণ, মানব সম্পদ, তারল্য পরিস্থিতির কারণে সেটিও খারাপ হয়ে যেতে পারে। তড়িঘড়ি না করে সব দিক বিবেচনা করে একীভূতকরণ করতে হবে বলে তিনি মনে করেন। গতকাল শনিবার ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ওয়েবিনারে তিনি এসব কথা বলেন। প্রবাসী সাংবাদিক মনির হায়দারের সঞ্চালনায় এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উন্নয়ন ও অর্থনীতি গবেষক জিয়া হাসান। বক্তব্যে দেন অর্থনীতিবিদ জ্যোতি রহমান ও ড. নিয়াজ আসাদুল্লাহ। এতে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, এর আগেও দেশে দু-একবার ব্যাংক মার্জ হয়েছে। তবে সেই মার্জ প্রক্রিয়ার ফলাফল বেশি একটা ভালো না। তবে বিশ্বে এ প্রক্রিয়ায় অনেক ব্যাংক মার্জ হচ্ছে। তিনি বলেন, সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি দুর্বল ব্যাংকের খারাপ লোন কিনে নিবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে দেশেতো এরকম সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানিই তৈরি হয়নি। এই অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির গাইডলাইন তৈরি করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের আরও ১৮ মাস সময় লাগবে বলেও জানায় আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। তাহলে কী আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে (আইএমএফ) দেখানোর জন্য তাড়াহুড়ো করে ব্যাংক মার্জ করা হচ্ছে? কারণ আইএমএফ বলেছিলো, ব্যাংক খাতে সুশাসন ফেরাতে হবে এবং নন-পারফর্মিং লোন কমিয়ে আনতে হবে।
জিয়া হাসান বলেন, দেশে ব্যাংকের সংখ্য কমিয়ে আনার প্রস্তাবটি আরবিট্রারি বা যৌক্তিক কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ছাড়াই করা হয়েছে। পাকিস্তানে ৩১টি ব্যাংক, শ্রীলঙ্কায় ২৪টি ব্যাংক, মালয়েশিয়াতে ২৬টি ব্যাংক, ভিয়েতনামে ৪৯টি ব্যাংক এবং বাংলাদেশে ৬৪টি ব্যাংক রয়েছে। ব্যাংক একীভূত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক এখন পর্যন্ত যে পথে হাঠছে তাতে পুরোপুরি দায় পড়বে জনগণের উপর। এসব ব্যাংকগুলোর খারাপ সম্পদের দায় কে নেবে? বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক যদি অর্থের যোগান দেয়, তাহলে সেটা হবে খুবই মারাত্মক।
অর্থনীতিবিদ জ্যোতি রহমান বলেন, বিভিন্ন সময়ে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের নন-পারফর্মিং লোন বৃদ্ধির বিষয়ে সতর্ক করেছে। ব্যাংক খাতের বর্তমান এই বিপর্যস্ত অবস্থা একদিনে তৈরি হয়নি। অর্থনীতিতে অনেক কিছু কঠিন। তবে ব্যাংকের যেসব সমস্যা তা বিশ্বে অনেকবার ঘটেছে। তাই এ খাতের সমস্যা সমাধান অনেকটা সহজ হয়ে গেছে। ব্যাংক খাতের বর্তমান সমস্যা যদি ঠিক হয়েও যায় তারপরেও অনেক সমস্যা লেগে থাকবে। কারণ একটা সময় পরে আগের লোন শোধ না করলে ব্যাংক কাউকে লোন দেবে না। এতে ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি লোন কমে যাবে। এর ফলে ব্যবসা ও নতুন বিনিয়োগ কমবে।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,100SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ