বীরত্ব ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবসে ৭২ জন সদস্যকে পদক পরিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৪ ক্যাটাগরিতে এই পদক প্রদান করা হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় পিলখানায় বিজিবি দিবসের আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ শেষে তাদেরকে পদক পরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে পদকপ্রাপ্তরা বুকে ব্যাজ পড়ে সারিবদ্ধভাবে মাঠে প্রবেশ করেন। প্রধানমন্ত্রী একে একে পদকপ্রাপ্তদের ব্যাজের ওপর আঙুল রাখেন। প্রথমে নিতহ এক সৈনিকের স্ত্রীর হাতে ব্যাজ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে, সকাল সাড়ে ৯টায় বিজিবি সদর দপ্তরের বীরউত্তম আনোয়ার হোসেন প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বিজিবি দিবস-২০২৩ এর আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন তিনি। পদকপ্রাপ্তদের পদক পরিয়ে দেওয়ার পর বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর একে একে বিভিন্ন কন্টিজেন্ট প্রধানমন্ত্রীকে সালাম প্রদানের মধ্য দিয়ে প্যারেড গ্রাউন্ড মাঠ ত্যাগ করেন।
প্রথমে যৌথ কন্টিজেন্ট প্রধানমন্ত্রীকে সালাম প্রদান করে মাঠ ত্যাগ করেন। এরপর বাহিনীর মোটরসাইকেল বহর দল, ডগ স্কোয়াড দল সালাম প্রদান করেন। তারপর ক্যানায় স্পট কন্টিজেন্টের আগমন ঘটে। সীমান্ত এলাকার মাদক, অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য অনুসন্ধানে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে এই ক্যানিং দল। ক্যানায় স্পট দলের পর অস্ত্র চালনোর পারদর্শী ট্রিক ড্রিল জাওয়ান দল সালাম প্রদান করেন। এরপর একে একে অল্টিম ভেহিক্যাল এটিভি দল, প্রথমবারের মতো সংযুক্ত হওয়া দুটি হেলিকপ্টার ফ্লাইট প্রদর্শনী করা হয়। হেলিকপ্টার দুটি জাতীয় পতাকা ও বাহিনীর নিজস্ব পতাকা ঝুলিয়ে প্যারেড গ্রাউন্ড মাঠের ওপর দিয়ে টহল দেয় এবং প্রধানমন্ত্রীকে সালাম প্রদান করে। এরপরই এপিসি বা রাইট কন্ট্রোল ভেহিক্যাল বা আরসিভি বহর দল, এন্টি টাইম গাইডেড উইন কৌসার, ট্যাঙ্ক বিধ্বস্তকারী অস্ত্র এলকাটন হান্ড্রেড দল, সর্বশেষ সম্মিলিত বাদক দল প্রধানমন্ত্রীকে সালাম প্রদানের মধ্য দিয়ে মাঠ ত্যাগ করেন। শোভাযাত্রা শেষে প্রতিষ্ঠানের শিশু শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে পুষ্পর্ঘ ও উপহার প্রদান করা হয়। প্যারেড গ্রাউন্ডে বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ শেখ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ ও বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় সম্মিলিত প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। মঞ্চে বসে মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী প্যারেড গ্রাউন্ডে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ‘প্রেরণা’ এর শুভ উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠান শেষে বকুল তলায় হালকা জলযোগে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে সীমান্ত পরিবার কল্যান সমিতির (সীপকস) প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর স্ত্রী নওরীন আশরাফ প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে বরণ করেন। এসময় সীপকস এর বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন তিনি। স্টলের শাড়ি, ভ্যানেটি ব্যাগ, চাদরসহ দেশীয় পণ্য ঘুরে ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে চারটি স্থাপনা- বক্সবাজারে বিজিবি’র ‘ইনানী বিচ রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্ট, উর্মি সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্র, ১৫ তলা বিশিষ্ট অন্যান্য পদবীর রেজিমেন্টাল পারিবারিক বাসস্থান (পিলখানা ও যশোর), গাজীপুরে অবস্থিত বিজিবি’র ডেইরী ও পোল্ট্রি ফার্ম, পিলখানায় কেন্দ্রীয় মেহমানখানার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। সর্বশেষ দুপুরের দিকে বাহিনীর বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দরবার শুরু হয়। সেখানে বিজিবি’র কর্মকর্তারা বিভিন্ন দাবিসহ বর্তমান সরকারের আমলে বাহিনীর উন্নয়নের নানা দিক তুলে ধরেন। এরপর কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। দরবার শেষে দুপুর প্রায় দেড়টার দিকে পিলখানা ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী।