আড়াই বছরের শিশু সাইফুল ইসলাম আবীর। আপনমনে ছুটোছুটি করে খেলছিল। খেলতে খেলতে সে হঠাৎ চলে যায় পানির রিজার্ভ ট্যাংকের কাছে। পানির ট্যাংকের ঢাকনা ছিল না। শিশুর কচি শরীর নিমিষেই ট্যাংকের ভিতর পড়ে যায়। যখন তাকে উদ্ধার করা হয়, তখন নিথর হয়ে গেছে শিশুটি। স্বজনরা খুঁজে পাওয়ার আগেই ঢাকনা খোলা ট্যাংকের পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে তার। শুক্রবার মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটে রাজধানীর মিরপুর-২ নম্বরের মোল্লাপাড়ার বারেক মোল্লার মোড় এলাকার ২৩৬ নম্বর বাড়িতে।
মিরপুর থানার ওসি মুন্সী ছাব্বির আহমদ বলেন, মোল্লাপাড়ার ২৩৮ নম্বর টিনশেড বাসায় মা-বাবার সঙ্গে থাকত আবীর। তার বাবার নাম নুরুজ্জামান মিয়া এবং মা শাহনাজ বেগম। গতকাল বিকালে তারা সন্তানকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এক পর্যায়ে বিকাল ৫টার দিকে প্রতিবেশী ডা. মনিরুজ্জামানের ২৩৬ নম্বর বাসায় যান তারা। সন্দেহবশত সেখানকার ঢাকনাখোলা রিজার্ভ ট্যাংকে উঁকি দিয়ে আবীরের নিথর দেহ ভাসতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়।
মিরপুর থানার এসআই সজীবুর রহমান জানান, রিজার্ভ ট্যাংকের ভেতর থেকে আবীরকে তারা দ্রæত তুলে আনেন। তাকে প্রথমে শিশু হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, শিশুটি আর বেঁচে নেই।
মৃতের মা শাহনাজ বেগমের অভিযোগ, বাড়ির মালিক ডা. মনিরুজ্জামানের গাফিলতির কারণেই চিরতরে হারিয়ে গেছে তার সন্তান। ৬ মাস আগেও শিশুটি ঢাকনা খোলা ওই পানির ট্যাংকের ভেতরে পড়তে ধরেছিল। তবে সেবার একপাশে শরীর আটকে যাওয়ায় পানিতে পড়ে যায়নি। তখন এলাকার লোকজন ওই বাড়িওয়ালাকে সাবধান করেছিল। পানির ট্যাংকের ঢাকনা লাগিয়ে রাখতে বলেছিল। কিন্তু তিনি সেকথা কানে তোলেননি। ওই বাড়িতে কোনো কেয়ারটেকার নেই, থাকেন না মালিকপক্ষের কেউ। ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া বাসিন্দা এক নারী দেখাশুনা করেন। তিনিও বাড়িওয়ালার গাফিলতিকেই দায়ী করেন।
এদিকে ডা. মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, শিশুর মৃত্যু নেহাৎ দুর্ঘটনা। এর জন্য তার কোনো দায় নেই।