কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন জানিয়েছেন, আগস্টের পাঁচ তারিখের পরপর ৪৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসী, আলোচিত বন্দি, জঙ্গি জামিন পেয়েছেন। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের কয়েকটি কারাগারে বিশৃঙ্খলা-বিদ্রোহ করেন বন্দিরা। বিভিন্ন কারাগারে বাইরে থেকে চালানো হয় হামলা-ভাংচুর। এ পরিস্থিতিতে ২ হাজারেরও অধিক বন্দি পালিয়ে যান। তাদের মধ্যে মৃত্যুদন্ড যাবজ্জীবন, বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পাওয়া বন্দিসহ বিচারাধীন মামলার আসামিরা ছিলেন। এখন পর্যন্ত ৯০০ বন্দি পলাতক রয়েছে। এদের পালিয়ে যাওয়া ৯৮ জন জঙ্গির মধ্যে মৃত্যুদন্ড ৯ জন জঙ্গি ছিলেন। পালিয়ে যাওয়া ৭০ জন জঙ্গি এখনও পলাতক রয়েছে। তাদের ধরতে গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তা নেয়া হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর বকশিবাজারে অবস্থিত কারা অধিদপ্তরে কারা নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন গৃহীত ব্যবস্থাদি সম্পর্কিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আইজি প্রিজন্স বলেন, কয়েকটি কারাগার থেকে গোলাবারুদ লুটের ঘটনাও ঘটে এবং কয়েকটি কারাগারে বন্দি পলায়ন সময় কয়েকজন বন্দির মৃত্যুসহ অনেক কারা কর্মকর্তা এবং কারারক্ষী গুরুতর আহত হন। অগ্নি সংযোগ এবং ব্যাপক ভাংচুরের ফলে দুটি কারাগারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। অনেক কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসস্থলও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে সেনাবাহিনীর তাৎক্ষণিক সহায়তায় কারা বিভাগ অদম্য সাহসিকতার সঙ্গে অন্যান্য কারাগারগুলো সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হয়।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া অধিকাংশ বন্দিকেই কারাগারে ফেরত নিয়ে আসা সম্ভব হয়। এর মধ্যে কিছু বন্দি স্বেচ্ছায় এবং বাকিদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়। এ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে কারাগারের লুটকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদের উল্লেখযোগ্য অংশও উদ্ধার করা হয়েছে, অবশিষ্টগুলো উদ্ধারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
কারাবন্দি আওয়ামী লীগের ৯ জন ডিভিশন পেয়েছেন ঃ সাংবাদিককের এক প্রশ্নে জবাবে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ মোতাহার হোসেন বলেছেন, কারাবন্দি আওয়ামী লীগের ৩৭ জন মন্ত্রী-এমপির মধ্যে ৯ জন ডিভিশন পেয়েছেন। বাকিরা আবেদন ও আদালতের আদেশের ভিত্তিতে ডিভিশন পাবেন। কারা বিভাগ যেনো বাহিরের প্রভাবমুক্ত থাকে সে বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বন্দিদের সাথে মানবিক আচরণ নিশ্চিতে পদক্ষেপ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
কারাগারের অনিয়ম-দুর্নীতি নির্মূলে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে দাবি করে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, কারাগারে মাদক নির্মূলে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। মাদকাসক্ত কেউ কারা রক্ষীর দায়িত্বে থাকতে পারবে না। এটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। কারাগারকে নিরাপদ সংশোধনাগার করতে কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে কাজ করছে।