কবি, লেখক ও গবেষক ফরহাদ মজহার বলেছেন, সামনে দেশে দুটি নির্বাচন লাগবে। প্রথমে হতে হবে গণপরিষদ নির্বাচন, যেখানে আমরা নতুন রাষ্ট্র গঠন করতে পারি এবং নতুন সংবিধান অনুমোদন হবে। দ্বিতীয় নির্বাচন হবে সরকার গঠনের জন্য। কাজেই রাষ্ট্র গঠনের নির্বাচন আগে, তারপর সরকার গঠনের নির্বাচন। এই রোডম্যাপ মানা না হলে আমরা ভয়ানক বিপদে পড়বো। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘প্রফেসর কে আলী ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত ‘নতুন বাংলাদেশ:বৈষম্যহীন কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ফরহাদ মজহার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে টিকিয়ে রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। দেশে এতবড় একটি অভ্যুত্থান হয়ে গেছে, আমরা এত রক্ত দিলাম, কিন্তু দিন শেষে শেখ হাসিনারই সংবিধান পেলাম। কী করে এই সংবিধান এখনও থাকে! যাদের উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে, তারা মূলত রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা। আর এই রাষ্ট্রপতিকে শেখ হাসিনা নিয়োগ করে গেছেন। উপদেষ্টারা শপথ গ্রহণের সময় বলেছেন, ‘আমরা সংবিধান সংরক্ষণ করবো’। কিন্তু, এই সংবিধান তো শেখ হাসিনার সংবিধান।
তিনি বলেন, যখনই আমরা রাষ্ট্র গঠনের কথা চিন্তা করি, তখন রাজনৈতিক দলের কথাও চিন্তা করি। রাজনৈতিক দল আমাদের দরকার। রাজনৈতিক দল ছাড়া আমাদের চলবে না। কিন্তু, রাজনৈতিক দলগুলো চায়, সে ক্ষমতায় যাবে, ১৫ বছর ধরে লুটপাট করবে। এটা রাজনৈতিক দলের কাজ নয়। আগামীদিনে আমরা বাংলাদেশকে সুন্দর করে গঠন করবো; এমন একটি গঠনমূলক প্রস্তাবনা রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া দরকার। কিন্তু, তারা সেরকম কোনো প্রস্তাবনা দিচ্ছে না।
সেমিনারে মেজর (অব.) আহমেদ ফেরদৌস বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে শপথ নিয়েছেন, একারণে আমি একটু ব্যাথিত। ড. ইউনূস যদি রাজু ভাস্কর্য অথবা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে উপদেষ্টারাসহ ছাত্র-জনতার সামনে নিজেকে সরকার ঘোষণা করতেন তাহলে খুব ভালো হতো। সাবেক অতিরিক্ত সচিব শেখ নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের সামনে সোনালী সময় এসেছে। আমাদের একটা কল্যাণ রাষ্ট্র তৈরি করতে হবে। সংবিধানে অনেক কাটাছেঁড়া করা হয়েছে। এখন সেই সংবিধান সংস্কার করা প্রয়োজন। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে সংস্কার করতে হবে। সেমিনার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ কল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. নূরুল ইসলাম।