সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা অগ্রভাগে ছিল বলে দাবি করেছেন লে. কর্নেল (অব.) মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, সাবেক ও বর্তমান সৈনিক থেকে সব স্তরের কর্মকর্তারা এই সফলতার অংশীদার। অথচ অভ্যুত্থানের এক মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও আমরা অবহেলিত। শনিবার বেলা ১১টায় রাওয়া কমপ্লেক্সে রাওয়া রিসার্চ অ্যান্ড স্টাডি ফোরাম (আরআরএসএফ) আয়োজিত ‘জুলাই-আগস্ট ২০২৪ বিপ্লবে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান এবং বিপ্লবোত্তর ভ‚মিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো: নাসিমুল গনি, লে. কর্নেল (অব.) মোশাররফ হোসেন, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রফেসর মাহবুব উল্লাহ, প্রফেসর ড. শহীদুজ্জামান, ডা. জাহেদ উর রহমান। সভা পরিচালনা করেন লে. কর্নেল (অব.) মনীষ দেওয়ান।
লে. কর্নেল (অব.) মোশাররফ হোসেন বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা গণঅভ্যুত্থানে দুইভাবে ভুমিকা রেখেছেন। অবসরপ্রাপ্তরা সরাসরি মাঠে নেমেছেন এবং চাকরিরতরা চ‚ড়ান্ত সময়ে অবদান রেখেছেন। আবু সাইদ হত্যার পর সেনাবাহিনীর সব স্তরের সদস্যরা মাঠে নামেন। ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে তারা প্রতিবাদ ও জনসংযোগ শুরু করেন। ১৮ জুলাই মিরপুর ডিওএইচএস থেকে প্রতিবাদের সূচনা হয়। এটাই সর্বপ্রথম সশরীরে আন্দোলন।
তিনি বলেন, সরকার পতনের এক মাস পার হলেও এখনও আমাদের বিষয়ে জানার আগ্রহ কারো নেই। আমাদের দাবি আদায়ে কোর্টে যাওয়ার অধিকারও নেই। অন্যান্য সেক্টরের মতো মেধাহীন পদোন্নতির মাধ্যমে এই সেক্টরকেও ধ্বংস করা হয়েছে। এ নিয়ে আগে থেকেই সশস্ত্র বাহিনীতে ক্ষোভ ছিল।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. নাসিমুল গনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ‚্যত্থানে দেশ গড়ার নতুন সুযোগ হয়েছে। কাঙ্খিত দেশ গড়তে দেশপ্রেমিক, নিবেদিত মানুষ এবং সঠিক তদারকি প্রয়োজন।
তিনি বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তাছাড়া বেশির ভাগ পুলিশ সদস্য এখনো নিষ্ক্রিয়। এ অবস্থার সুযোগ নিচ্ছে বিগত সরকারের অপরাধীরা। দেশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংসের ষড়যন্ত্র চলছে। বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকারের পক্ষে সব সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় দেশের অবসরপ্রাপ্ত প্রায় সাড়ে চার হাজার সেনা অফিসার ও সেনা সদস্যদের সম্পৃক্ত কারার আহবান জানাচ্ছি। বিশেষ করে দেশের থানাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তাদের ব্যবহার করা যেতে পারে। তাছাড়া দেশের অনেক খাত আছে যেখানে দেশের প্রয়োজনে তাদের ব্যবহার করা যেতে পারে।
অপরাধীদের বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বিগত সরকার সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা বাহিনীও ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। সশস্ত্র বাহিনীসহ সব জায়গায় মেধাহীন নিয়োগ দিয়ে নৈরাজ্য তৈরি করেছে। অনেক সংকট ও ৪০ লাখ মামলা রেখে গেছে। এখনো প্রতিবিপ্লবের জন্য টাকা ছড়ানো হচ্ছে। চিহ্নিতদের ভাসানচর নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।