তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমঘন এলাকা আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ থামছে না। গতকাল সোমবারও কয়েকটি কারখানায় বিক্ষোভ হয়েছে। কারখানা সকালে খোলা থাকলেও দুপুরের পর অপ্রিতীকর ঘটনা এড়াতে অন্তত ৭৯টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। সকাল থেকে কয়েকটি পোশাক কারখানার গেটে ছুটির নোটিশ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও কয়েকটি পোশাক কারখানায় সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়ে উৎপাদন শুরু করেছিলেন। পরে পর্যায়ক্রমে কারখানা ভাঙচুরের হাত থেকে রক্ষার জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। ডিইপিজেডের ভেতরে দুটি তৈরি পোশাক কারখানা লেনী ফ্যাশন ও লেনী অ্যাপারেলসের শ্রমিকেরা তাদের বকেয়া পাওনা টাকা বেপজা থেকে আদায়ের দাবিতে ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের মূল ফটকের ভেতরের অংশে মানববন্ধন করেছেন। সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আশুলিয়ার ডিইপিজেডের বেপজার মূল ফটকের সামনে বন্ধ হওয়া লেনী ফ্যাশনস লিমিটেড ও এ্যাপারেলস লেনীর প্রায় ২ হাজার শ্রমিক এবং কর্মকর্তারা এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণে করেন। এদিকে টঙ্গীতে ১৩ দফা দাবিতে গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেইজ ও ব্রাভো অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করে সড়ক অবরোধ করেছে। সোমবার সকাল আটটা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত জয়দেবপুর-টঙ্গী আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করা হয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানায়, রবিবারও আমরা আমাদের ১৩ দফা দাবি নিয়ে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়েছিলাম। এক পর্যায়ে আলোচনা হলেও দাবিগুলো মানা হয়নি। সোমবারও আমরা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ পালন করছি। আমাদের দাবিগুলো মানা না হলে কোন শ্রমিক কর্মচারী কাজে যোগ দেবো না। এদিকে, সোমবার সকাল ৯টা থেকে টঙ্গী বাজারের বিপরীতে বাটা সু কোম্পানির শ্রমিকেরা ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক সংলগ্ন কারখানার সামনে বিক্ষোভ করে। চাকরি স্থায়ীকরণ, বেতন বৃদ্ধি, পারিবারিক চিকিৎসা সুবিধাসহ আট দফা দাবি নিয়ে তারা বেশ কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন বলেন, শ্রমিকদের দাবিগুলো নিয়ে আজ মঙ্গলবার চুড়ান্ত আলোচনা হবে। আশা করি সমাধান হয়ে যাবে।
এদিকে সোমবার গাজীপুরের বেশিরভাগ তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে স্বাভাবিকভাবে উৎপাদন প্রক্রিয়া পুরোদমে চালু রয়েছে। শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন। গত সপ্তাহজুড়ে নানামুখী দাবি দাওয়া নিয়ে কারখানার শ্রমিক ও চাকরিপ্রার্থী বহিরাগতরা আন্দোলন করে আসছিল। এসময় সড়ক অবরোধসহ বেশ কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। কারখানা সমূহেরনিরাপত্তা জোরদার করেছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। টহল জোরদার করেছেন সেনা সদস্যরাও। মালিক ও শ্রমিকদের অভিযোগ, আন্দোলন করছে বহিরাগতরা। শিল্পে অস্থিরতা দূর করতে শ্রমিকরা সতর্ক অবস্থানে থেকে নির্বিঘেœ কাজ করতে চায় তারা। সকাল থেকে গাজীপুরের বেশ কয়েকটি শিল্প কারখানায় দেখা গেছে, কারখানার মুল ফটকে অবস্থান রয়েছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এছাড়াও বোর্ড বাজার, গাজীপুর সদর, কোনাবাড়ি, কাশিমপুরসহ প্রতিটি শিল্প কলকারখানায় সব ঠিকঠাক রেখে উৎপাদন কার্যক্রম চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা যায় গার্মেন্টস সেক্টরে নাশকতার মাধ্যমে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির উসকানিদাতা ছাত্রলীগ নেতা ইসতিয়াক আহম্মেদ হৃদয়-কে গ্রেফতার করেছে নেত্রকোনা জেলা পুলিশ।