ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) খালেদা জিয়া হলের পুরাতন বøকে গত ৩ মাসে অন্তত ৪-৫ বার শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাÐের ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ গত ২ সেপ্টেম্বর শর্ট সার্কিটের ঘটনা ঘটে। পরে গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে পুনরায় বৈদ্যুতিক সংযোগে ত্রুটি দেখা দেয়। এতে মারাত্মক কোনো ক্ষতি না হলেও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায় গোটা হল। ফলে আতঙ্কিত হয়ে একাধিক ছাত্রীর সেন্স লেস হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়। পরে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ নিয়ে হলে অবস্থানরত ছাত্রীদের মাঝে চরম আতঙ্ক আর উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।
জানা যায়, খালেদা জিয়া হলের পুরাতন বøকের বয়স অন্তত ৩০ বছর। বøকটিতে আড়াইশো ছাত্রীর ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। তবে সেখানে যে মাত্রার বিদ্যুৎ সঞ্চালন হয়, লাইন গুলো সে মাত্রার শক্তিশালী নয়। তাছাড়া লাইনগুলো দীর্ঘদিনের পুরনো হওয়ার কারণে প্রায়শই শর্ট সার্কিটের ঘটনা ঘটছে।
ছাত্রীদের অভিযোগ, গত জুলাই মাসেও সেখানে শর্ট সার্কিটের ঘটনা ঘটে। সেসময় হলের তিনতলা পর্যন্ত বৈদ্যুতিক সংযোগ মেরামত করার কথা থাকলেও দুই তলা পর্যন্ত করা হয়। বিভিন্ন জায়গায় মেরামতের নামে দেয়া হয় জোড়াতালি। এছাড়া হল গুলোতে নেই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রও। ফলে ঝুঁকি নিয়েই ছাত্রীদের এ বøকে বসবাস করতে হচ্ছে।
এদিকে, দূর্ঘটনার পর হলের আবাসিক শিক্ষক ও ডিনদের সঙ্গে দুই দফায় সাক্ষাৎ করেন ছাত্রীরা। ছাত্রীরা ডিনদের সঙ্গে সাক্ষাতে বেশ কয়েকটি দাবি জানিয়েছে। দাবিগুলো হলো, দুইজন ইলেক্ট্রিশিয়ান সব সময় হলে অবস্থান করতে হবে, হলের কোন বাজেট কোথায় ব্যয় হয় শিক্ষার্থীদের মাঝে তার স্বচ্ছ হিসাব পেশ করা, বর্তমানে যে সমস্যা চলছে তা স্থায়ী ভাবে সমাধান করতে কত অর্থ ব্যয় হবে তা শনিবারের মধ্যে উপস্থাপন করা। এছাড়া শনিবারের মধ্যে সকল দাবি মেনে না নেয়া হলে তারা অনশনেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) কে. এম শরীফ উদ্দীন বলেন, আসলে এটা অনেক পুরাতন একটি হল। এখানে যে সমস্যা হচ্ছে তা সমাধানের জন্য নতুন করে পুরো বিল্ডিং আবার ওয়্যারিং করতে হবে। এতে কি পরিমাণ অর্থ লাগতে পারে এ নিয়ে একটি বাজেট কর্তপক্ষকে দেয়া হবে। আর্থিক অনুমোদনের পরে কাজ শুরু হবে। তবে সাময়িক সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের সার্বক্ষণিক একজন ইলেক্ট্রিশিয়ান হলে রাখা আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. আ ব ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী বলেন, ঐ রাত্রের ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত। ভয়ের কারণে মেয়েরা অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলো। আমরা ছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছি। আমি হাউজ টিউটর, ডিনস কমিটি, চীফ ইঞ্জিনিয়ার এবং নিয়োজিত ইলেক্ট্রিশিয়ানের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি, যেকোন সমস্যা হলে যেনো সঙ্গে সঙ্গে সমাধান করা যায়।
নতুন করে বৈদ্যুতিক লাইনের ওয়্যারিংয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ আছে, শনিবারের আগে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না।