২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনা হঠাৎ করে ঘটেনি, এই হত্যাকান্ড বহু দিনের ষড়যন্ত্রের ফসল। এর সাথে জড়িত সবাই আওয়ামীলীগের লোক। শুধু শুধু নীরিহ মানুষদের বন্দী করে রাখা হয়েছে। এমনকি রক্তাক্ত সেই বিদ্রোহের পর বিডিআরের নাম পরিবর্তন করে বাহিনীর পোশাকও বদলে ফেলা হয়। অথচ এই হত্যাকান্ডের বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে। অবিলম্বে একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিশন গঠন এবং নতুন করে বিচার করতে হবে।
গতকাল রবিবার বিকালে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ পলিসি ডিসকোর্স (বিপিডি) আয়োজিত ‘পিলখানা হত্যাকান্ড হাসিনা ও ভারতের ষড়যন্ত্র শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
ইঞ্জিনিয়ার তারেক আমিনের সঞ্চালনায় আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক কর্ণেল মো. (অব:) আব্দুল হক, ঢাকা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ কাজী নেয়ামুল হক, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত জাবির ইব্রাহিমের বাবা কবির হোসেন, জৈনপুরী মঞ্জিলের পীর এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী, বাংলাদেশ গণতন্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান এ আর এম জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশে মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মুফতি ফখরুল ইসলাম, বাংলাদেশ জনতা ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আবু আহাদ আল মামুন, জামিয়া ইসলামিয়া মারকাজুল আজিজ এর সাইখুল হাদিস মাওলানা আবুল কাসেম কাসেমী, ও ফখরুল ইসলাম প্রমুখ।
দীর্ঘদিন পরিকল্পনা করে পিলখানা হত্যাকান্ড চালানো হয়েছে উল্লেখ করে কর্ণেল (অব:) আব্দুল হক বলেন, এই পিলখানা হত্যাকান্ডের সাথে আওয়ামী লীগের নেতারা জড়িত ছিল। শুধু শুধু নীরিহ মানুষদের বন্দী করে রাখা হয়েছে। সঠিক তদন্ত হলে সবকিছু বেরিয়ে আসবে। পিলখানার বিডিআর হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ করায় হাসিনা সরকার আমাকে চাকরিচ্যুত করেছে।
তিনি বলেন, পিলখানা হত্যার এমনি এমনি হয়নি। এটা দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার অংশ ছিল। এই হত্যাকান্ড কোনো স্বাভাবিক হত্যা ছিলনা। পুরো দেহকে ছিন্নভিন্ন করার পরে ব্রাশ ফায়ার করা হয়েছে। আব্দুল হক আরও বলেন, হাসিনা যদি আবারও ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশে একবারেই ভারতের পেটে চলে যাবে।
ছাত্র-জনতার অভ‚ত্থানে নিহত হওয়া জাবির ইব্রাহিমের বাবা কবির হোসেন বলেন, আমার আদরের সন্তান জাবির ইব্রাহিম ৫ আগস্ট পুলিশের গুলিতে মারা গেছে। এই ছাত্র আন্দোলন এবং পিলখানা হত্যাকান্ডে যারা নিহত হয়েছে এটার মূল আসামি হচ্ছে শেখ হাসিনা। তাকে দেশে এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আন্দোলনে নিহতদের পূর্নাঙ্গ তালিকা এবং হতাহতদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
বাংলাদেশে মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের বলেন, পিলখানা হত্যাকান্ড ভারত ঘটিয়েছে। ভারত মূলত বাংলাদেশকে শেষ করার জন্যই এটি করেছে। তিনি আরও বলেন, হাজার মানুষের জীবনের বিনিময় এদেশ থেকে স্বৈরাচার পতন হয়েছে। ছাত্র-জনতা না নামলে আমরা এই স্বাধীনতা পেতাম না। তবে দেশের এ অবস্থাতে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের দোসরদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী বলেন, ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কেবল হাসিনার পতন হয়নি ভারতীয় আগ্রাসন থেকে মুক্ত হয়েছে দেশ।
বিডিআরের বহু লোক এখনো জেলে বন্দী এবং এ বাহিনীর পরিবারের অনেকে এখন ভিক্ষা করছে তাদের পুণর্বাসন করতে হবে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, পিলখানা হত্যাকান্ডের বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে। কেন বিডিআর হত্যাকান্ড হয়েছিল এর সুষ্ঠু বিচার হতে হবে।