কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময় গুলিতে এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় পরিবারের মামলা নিতে গড়িমসি করার অভিযোগে গত শনিবার রাতে রাজধানীর লালবাগ থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্র-জনতা। পরে অবশ্য মামলা নিয়েছে পুলিশ। গত ১৮ জুলাই লালবাগে পুলিশের গুলিতে মারা যান খালিদ সাইফুল্লাহ নামের এক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৯১ জনকে আসামি করে লালবাগ থানায় মামলা দায়ের করতে চাইছিলেন খালিদের বাবা। দু’দিন ধরে মামলা নিতে পুলিশ গড়িমসি করছিলো।
নিহত খালিদ সাইফুল্লাহর বাবা শনিবার রাতে লালবাগ থানায় মামলা করতে যান। মামলা নিতে পুলিশের গড়িমসির বিষয়টি জানাজানি হলে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ও সহসমন্বয়ক এ বি জুবায়েরের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা থানায় অবস্থান নেন। পাশাপাশি এলাকার মানুষও সেখানে জড়ো হন। রাত একটা পর্যন্ত চলে এই অবস্থা। এ সময় থানার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সেনাসদস্যরাও সেখানে ছিলেন। তারা এলাকাবাসীকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।
অবশ্য শিক্ষার্থীদের অবস্থানের সময় থানায় ছিলেন না ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার হেলাল উদ্দিন। তিনি বলেন, নিহতের পরিবার রাতে থানায় মামলা করতে আসে। যেহেতু হত্যা মামলা, তাই তাদের বলেছি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে মামলা রুজু করতে হবে। এজন্য রবিবার সকালে আসতে বলা হয় তাদের। কিন্তু তারা এতে রাজি নন। লোকজন এসে মামলা নিতে চাপ দিতে থাকে। পরে তাদের মামলা নেওয়া হয়েছে।
নিহত খালিদ সাইফুল্লাহ একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাসা লালবাগ থানার রসুলবাগে। গত ১৮ জুলাই আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়। পরে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ দাফন করে পরিবার। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সাইফুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার পরিবারের সদস্যরা মামলা করতে থানায় গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে ফিরিয়ে দেয়। এ কারণে শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এলাকাবাসীসহ নিহতের বাবা মামলা করতে থানায় যান। পুলিশ মামলা না নেওয়ায় এলাকাবাসী থানায় ভিডিও করে রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। ওই ভিডিওতে এক তরুণকে বলতে শোনা যায়, সাইফুল্লাহর বাবা শুক্রবার মামলা করতে এসেছিলেন। কিন্তু পুলিশ মামলা না নিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছে। আজকেও (শনিবার) মামলা করতে এসেছিলেন, তাও নেওয়া হয়নি। ওসি আওয়ামীপন্থি হওয়ায় মামলা নিচ্ছেন না। কিন্তু মামলা রাতেই নিতে হবে। অন্যথায় আরও শিক্ষার্থী থানায় আসবেন। পরে মামলা নেওয়ার তথ্যও জানিয়েছেন তারা।