spot_img

জীবন বিপন্ন হতে পারে, এমন কাউকে কাউকে আশ্রয় দিয়েছি–সেনাপ্রধান

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, ‘অন্তর্বতী সরকার কিছু সংস্কার করতে চাচ্ছে, একটি অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চাচ্ছে। সেটার জন্য যতধরণের সহযোগিতা এই সরকার চাইবে সেটা আমরা করব। গতকাল মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিকালে রাজশাহী সেনানীবাসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সেনা প্রধান বলেন, পুলিশের কাছ থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার জরুরী। অনেকগুলো উদ্ধার হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চলছে। আশা করি সেগুলোও উদ্ধার হয়ে যাবে।
ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে এসেছে। আমি বলবো যে পরিস্থিতি এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে। এটার জন্য আমরা সবাই কাজ করেছি। আপনারাও আমাদের সাহায্য করেছেন এ জন্য আমরা আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ কিছু ট্রমার মধ্যে আছে। এই ট্রমাটা কাটিয়ে উঠলে পুলিশ তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারবে। পুলিশ বিভিন্ন থানায় ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। এটা একটা ভাল দিক। আমরা পুলিশকে প্রটেকশন দিয়ে যাচ্ছি। তারা যখন স্বয়ংসম্পন্নভাবে কাজ শুরু করবে; যখন পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হয়ে আসবে; তখন আমরা ইনশাল্লাহ সেনানিবাসে ফিরে যাব। সে পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকবো।
বিমানবন্দর বা সীমান্ত বন্দর থেকে যাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, জীবন বিপন্ন হয় ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে এমন কাউকে কাউকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি এবং তাদের বিরুদ্ধে যদি কোন অভিযোগ থাকে মামলা হয় অবশ্যই তারা শাস্তির আওতায় যাবেন। অবশ্যই আমরা চাইবো না জুডিশিয়াল বহিভ‚ত কোন এ্যাকশন তাদের উপর হোক। বিচার বহিভর্‚ত কোনো হামলা তাদের উপর হোক। যাদের উপর বিচার বহির্ভ‚ত হামলার হুমকি রয়েছে, তাদের আমরা আশ্রয় দিয়েছি। যেই হোক, যে দলেরই হোক, যে মতেরই হোক, যে ধর্মেরই হোক। সেটা আমরা করবো।
আরোক প্রশ্নের জবাবে সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, ওয়ান ইলেভেনের মতো কিংবা অপারেশন ক্লিন হার্টের মতো সেনাবাহিনী কঠোর হবেনা। আমরা এই সরকারকে সর্বোতভাবে সাহায্য করবো। সরকার কিছু সংস্কার করতে চাচ্ছে এবং একটা ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন করতে চাচ্ছে সেটার জন্য যে ধরনের, যতদূর সহায়তা তারা আমাদের কাছে চাইবেন, সেটা আমরা করবো।
বর্তমান পরিস্থিতিতে বৈদেশিক কোনো চাপ আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, ‘না কোনো চাপ নেই। তবে মাইনোরিটি ইস্যু নিয়ে কিছু কথাবার্তা হয়েছে। ২০টি জেলায় ৩০টির মতো মাইনোরিটি রিলেটেড অরাজগতা হয়েছে। এটা অবশ্যই কাম্য নয়। একটা হওয়াও কাম্য নয়। আমরা এই বিষয়টি দেখছি এবং যারা অপরাধি অবশ্যই তাদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবো ইনশাল্লাহ।
গোপালগঞ্জের সেনাবাহিনীর গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, এটা অবশ্যই একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। পরিস্থিতি এখন একদম স্বাভাবিক। তাদের নেতৃবৃন্দ এসেছেন, আমাদের সাথে কথা বলেছেন। তবে যারা এই অপরাধ করেছেন, তদন্ত হবে, যারা এই অপরাধে যুক্ত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে, বিচার হবে।
এর আগে সেনাপ্রধান রাজশাহীর অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক ও মতবিনিময় করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ আনিসুর রহমান, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। এছাড়া র‌্যাব-৫ অধিনায়ক ও বিজিবি’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,000SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ