spot_img

সরকার পদত্যাগের একদফা

শহীদ মিনার থেকে সরকার পতনের এক দফা ঘোষনা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। গতকাল শনিবার ছাত্র-নাগরিকের সমাবেশ থেকে তিনি এই ঘোষনা দেন। এছাড়া আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সকল ক্যাম্পাস ও হলগুলো খুলে দেওয়ার আল্টিমেটাম দেন তিনি। একই সাথে পূর্বের ঘোষনা অনুযায়ী আজ (রবিবার) থেকে চলবে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন। এদিন শহীদ মিনার থেকে অসহযোগ আন্দোলনের দিক নির্দেশনা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। এদিকে এক বিবৃতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছেন।
শহীদ মিনারে এই সমাবেশে জড়ো হন হাজারো মানুষ। সেখানে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি। শুধু পদত্যাগ করলেই হবে না দেশে যত খুন, গুম হয়েছে তার দায়ে তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। শুধু শেখ হাসিনা নয়, পুরো মন্ত্রীপরিষদকে পদত্যাগ করতে হবে। এই ফ্যাসিবাদি শাসনব্যবস্থাকে বিনাশ করতে হবে। আমাদের এক দফা হলো শেখ হাসিনাসহ এই সরকারের পতন ও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গঠন করতে চাই, রাজনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করতে চাই যেখানে আর কখনোই কোনো ধরণের স্বৈরতন্ত্র ফিরে আসবে না। আমরা সরকার ও ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার বিলোপ ঘোষণা করছি। এজন্য ছাত্র নাগরিকের অভ্যুত্থান আহবান করছি।
নাহিদ আরও বলেন, আমরা জনগণকে বলতে চাই, স্বতস্ফূর্ত ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থান শুরু হয়েছে আপনারা তার সাথে এসে যোগ দিন। পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় সংগঠিত হন। আমরা খুব দ্রæতই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাত্র নাগরিক অভ্যুত্থানের জন্য সর্বোস্তরের নাগরিক, ছাত্র সংগঠন ও সকল পেশাজীবী মানুষের সঙ্গে মিলে সম্মিলিত মোর্চা ঘোষণা করবো। সকলের সাথে আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যত বাংলাদেশের জাতীয় রূপরেখা শিগগিরই আপনাদের সামনে ঘোষণা করবো। আমরা জনগণকে ‘সর্বাত্মক অসহযোগ, আন্দোলনে আসার আহবান জানাচ্ছি। সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন চলবে। আমরা সরকারের সাথে কোনো ধরণের সহযোগিতা ও সমর্থন করবো না। যদি কোনোভাবে ইন্টারনেট বন্ধ, কারফিউ দেয়া হয় তা আমরা প্রত্যাখান করবো। আমরা প্রয়োজনে গণভবন ঘেরাও করবো। সবার প্রতি আহবান থাকবে আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে অসহযোগ ও রাজপথের কর্মসূচি পালন করবেন। জনগণকে উদ্বুদ্ধ করবেন। নিরাপত্তাবাহিনী, সেনাবাহিনী, সরকারি কর্মকর্তা সবার কাছে আহবান থাকবে জনগণ যদি সরকারকে প্রত্যাখান করে, সরকার যদি জনগণের বিপক্ষে দাঁড়ায় সেই সরকারের হুকুম মানতে আপনারা আর বাধ্য নন। সরকারের সমর্থন না দিয়ে আপনারা জনগণের পাশে দাঁড়ান। আপনাদের আমাদের মিছিলে আসার আহবান জানাচ্ছি। আমরা হুকুমের আসামির বিচার চাই, আপনাদেরকে কেন খুন করতে বাধ্য করা হচ্ছে। আমরা সকল গণহত্যার বিচার করবোই। এই সরকারের লুটপাট ও গণহত্যাসহ সকল অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা ও সকল রাজবন্দীদের মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা প্রয়োজনে জেল ভেঙে আমাদের ভাইদেরকে মুক্ত করে নিয়ে আসবো।
নাহিদ বলেন, এই সরকার মানুষ খুন করেছে এবং লাশও গুম করেছে। যারা খুন করেছে তারা কিভাবে সেই খুনের বিচার করবে? আমরা এই সরকারের কাছে খুনের বিচার প্রত্যাশা করি না। সর্বোস্তরের মানুষকে খুন, গুম ও গ্রেফতার করে নির্যাতন করা হচ্ছে। একদিকে গ্রেফতার নির্যাতন করা হচ্ছে, অন্যদিকে আমাদের সংলাপের জন্য আহবান জানানো হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বাংলাদেশের জনগণ নেমে এসেছিলো। আমরা এই জনগণকে মুক্ত করতে এখন আমরা রাস্তায় নেমেছি। আমরা আজকে এক দফার দাবিতে এখানে হাজির হয়েছি। আমরা জীবনের নিরাপত্তা, বাংলাদেশের মানুষের জীবনের নিরাপত্তা, সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সমাজে এক দফার সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। সরকার এখন বলছে আলোচনার জন্য গণভবনের দরজা খোলা রয়েছে। আমরা মনে করি তিনি আগেই বুঝে গিয়েছেন যে গণভবনের দরজা খোলা রাখতেই হবে।
শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে দমন-পীড়নের কথা উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, কোটা সংস্কার ও মেধাভিত্তিক সমাজ গঠনের দাবিতে আমরা বাংলাদেশের ছাত্র তরুণরা সারা বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছিলাম। আমাদের ন্যায্য ও যৌক্তিক আন্দোলনে ছাত্রলীগের হায়েনারা আমাদের বোনদের নির্মমভাবে পিটিয়েছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকেও দমন পীড়নে কাজে লাগিয়ে সারদেশে ছাত্রদের ওপর নির্মম অত্যাচার করা হয়েছে। যার প্রতিবাদে আমরা সারাদেশে শাটডাউন কর্মসূচি দিয়েছিলাম। সেই কর্মসূচিতে সারা বাংলার ছাত্রদের সাথে অভিভাবক, শিক্ষক, শ্রমিকসহ সর্বোস্তরের নাগরিকরা আমাদের নিরাপত্তা দিতে কর্মসূচিতে যোগ দেয়। কিন্তু আমরা দেখেছি সরকার শাটডাউন কর্মসূচিতে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে ডিজিটাল ক্রাকডাউন শুরু করেছিল। পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে নামিয়ে কারফিউ জারি করা হয়। সেইরাতে আমরা কারফিউ ভাঙার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই ঘোষণা কোনো মিডিয়ায় প্রচার করতে দেয়া হয়নি। তারপরও ছাত্রজনতার প্রতিরোধ থামেনি।
জবরদস্তি করে ডিবি অফিস থেকে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষনা দেওয়া হয় উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, ১৯ জুলাই আমাদের সমন্বয়কদের তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। আমাদেরকে জবরদস্তি করে আন্দোলন প্রত্যাহার ও সরকারের সঙ্গে সংলাপের প্রস্তাব দেয়। আমাদেরকে হাসপাতালে জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। সেটিও না পেরে আমাদের ডিবি অফিসে তুলে নিয়ে জোর করে আমাদের থেকে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ানো হয়েছে। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীরা আমাদের বক্তব্য বিশ্বাস না করে রাজপথ দখলে রেখেছিল। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও ডিবি অফিসে সমন্বয়কদের অনশনের কারণে সেই পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়ে গিয়েছিল। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই খুনের হিসাবটা এই পর্যন্ত আমরা পাইনি।
পরবর্তীতে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের জরুরী নির্দেশনা দেন আরকে সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, কেউ কোন ধরণের ট্যাক্স বা খাজনা প্রদান করবেন না। বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানির বিলসহ কোন ধরণের বিল পরিশোধ করবেন না। সকল ধরণের সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত ও কল কারখানা বন্ধ থাকবে। আপনারা কেউ অফিসে যাবেন না, মাস শেষে বেতন তুলবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের অর্নিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে কোন ধরণের রেমিটেন্স দেশে পাঠাবেন না। সকল ধরণের সরকারি সভা, সেমিনার, আয়োজন বর্জন করবেন। বন্দরের কর্মীরা কাজে যোগ দিবেন না। কোন ধরণের পণ্য খালাস করবেন না। দেশের কোন কলকারখানা চলবেনা, গার্মেন্টসকর্মী ভাই বোনেরা কাজে যাবেন না। গণপরিবহন বন্ধ থাকবে, শ্রমিকরা কেউ কাজে যাবেন না। জরুরি ব্যাক্তিগত লেনদেনের জন্য প্রতি সপ্তাহের রবিবারে ব্যাংকগুলো খোলা থাকবে। পুলিশ সদস্যরা রুটিন ডিউটি ব্যাতিত কোন ধরণের প্রটোকল ডিউটি, রায়ট ডিউটি ও প্রটেস্ট ডিউটিতে যাবেন না। শুধু মাত্র থানা পুলিশ নিয়মিত থানার রুটিন ওয়ার্ক করবে। বিজিবি ও নৌবাহিনী ব্যাতিত অন্যান্য বাহিনী ক্যান্টনমেন্টের বাইরে ডিউটি পালন করবে না। বিজিবি ও নৌবাহিনী ব্যারাক ও কোস্টাল এলাকায় থাকবে। আমলারা সচিবালয়ে যাবেন না, ডিসি বা উপজেলা কর্মকর্তারা নিজ নিজ কার্যালয়ে যাবেন না। দেশ থেকে যেন একটি টাকাও পাচার না হয়, সকল অফশোর ট্রান্জেকশন বন্ধ থাকবে। বিলাস দ্রব্যের দোকান, শো রুম, বিপনী-বিতান, হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট অর্নিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানপাট বেলা ১১-১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে! তবে হাসপাতাল, ফার্মেসি, জরুরি পরিবহন সেবা যেমন-ঔষধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিবহণ, অ্যাম্বুলেন্স সেবা, ফায়ার সার্ভিস, গণমাধ্যম, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহণ, জরুরি ইন্টারনেট সেবা, জরুরি ত্রাণ সহায়তা এবং এই খাতে কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবহণ সেবা চালু থাকবে।
মিরপুর ১০ নম্বরের চিত্র : কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ-সমাবেশে তারা কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারীর দেয়া ঘোষণা অনুযায়ী আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান। এই কর্মসূচিতে সরকারি বাঙলা কলেজ, মিরপুর কলেজ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেসনালস, বিইউবিটি, প্রাইম ইউনিভার্সিটিসহ আশপাশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। সাথে অংশ নেন শিক্ষক ও অভিভাবকরাও।
এই কর্মসূচি চলাকালে সকল যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রক্ষাকারীবাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় দেখা যায়। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিতে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরে জড়ো হতে শুরু করেন বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিকাল প্রায় ৫টা পর্যন্ত তারা এখানে অবস্থান নেন। অনেক শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের অভিভভাবকরা এসেও এই কর্মসূচিতে যোগ দেন। আলিমুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক বলেন, সন্তানদের যৌক্তিক দাবির সাথে আমিও একাত্মতা ঘোষণা করে এখানে অংশ নিয়েছি। আসমা সুলনাতা নামে এক অভিভাবক বলেন, আমার মেয়ে এসেছে। তার নিরাপত্তার জন্য আমিও সাথে এসেছি।
সায়েন্সল্যাব মোড়ে অবস্থান : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড়ে অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুর থেকে শিক্ষার্থীরা সায়েন্সল্যাব মোড়ে জড়ো হতে শুরু করে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও বাড়তে থাকে। ফলে সায়েন্সল্যাব মোড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে নিউমার্কেটের দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। তবে সাইন্সল্যাব মোড় ও তার আশপাশে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের কাউকে অবস্থান করতে দেখা যায়নি। সরকার বিরোধী শ্লোগানের সঙ্গে গ্রাফিতি এঁকে প্রতিবাদ জানায় আন্দোলনকারীরা।
যাত্রাবাড়ীতে সড়ক অবরোধ : রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনিরআখড়া-কাজলা এলাকায় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১টার পর থেকে শনিআখড়া-কাজলা এলাকায় আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা চানখাঁরপুল থেকে শনিরআখড়ার দিকে কোনো যানবাহন যেতে দেয়নি। ফলে ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
রামপুরায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে যান চলাচল বন্ধ : শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবি আদায়ে পূর্বঘোষণা অনুযায়ি রাজধানীর আফতাবনগরে ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে সকাল থেকে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। সেখান থেকে দুপুর পৌনে দুইটার দিকে থেকে রামপুরা ব্রিজে এসে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সামনের রাস্তা দখলে নেয় শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা সবাই ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে থেকে মূল সড়কে অবস্থান নেয়। এতে করে সড়কের সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শান্তিনগর মোড়ে শিক্ষার্থীদের অবস্থান : রাজধানীর বেইলি রোড থেকে শান্তিনগর মোড়ে অবস্থান নেয় স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসময় ওই এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেইলি রোডে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ, হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাড়াও আশপাশের স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে।
ইস্টওয়েস্টের সামনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ : শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি আদায়ে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী রাজধানীর আফতাবনগরে ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তার পাশেই আফতাব নগর গেট থেকে প্রধান সড়কের মুখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবস্থান নিতে দেখা যায়। সকাল ১০টা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা আসতে শুরু করে। এসময় তাদের হত্যাকারীদের বিচার ও সরকারের পদত্যাগ চেয়ে শ্লোগান দিতে দেখা যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্র্যাক, আইইউবিএটি, আইডিয়াল স্কুলসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়তে শুরু করে সেখানে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সতর্ক অবস্থানে থাকেন।
খিলগাঁওয়ে সড়কে অবস্থান শিক্ষার্থীদের : দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা খিলগাঁও রেলগেট এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তায় অবস্থান নেয়। খিলগাঁও সাউথ পয়েন্ট স্কুল এ্যান্ড কলেজ, খিলগাঁও হাইস্কুলসহ আশেপাশের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান নেয়। তাদের সঙ্গে বেশ কয়েকজন অভিভাবককেও বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের গলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড ঝুলানো ছিল।
উত্তরায় বিক্ষোভ, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের অবস্থান : উত্তরায় বিএনএস সেন্টারের পাশের রাস্তায় অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকদের দেখা গেছে। অনেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে তাদের বাবা-মাকে দেখা গেছে। বিএনএস সেন্টারের সামনে অবস্থান নেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুটি দল বিএনএস সেন্টারের নিচে অবস্থান করেন। উত্তরা ও এর আশপাশের এলাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্ল্যাকার্ড হাতে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে।
নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভ : বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেটের সামনে মূল সড়কে অবস্থান নেয় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। বৃষ্টি উপেক্ষা করে শ্লোাগানে শ্লোগানে মুখরিত ছিল পুরো এলাকা। অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের একটি অংশ যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে জড়ো হতে থাকেন। এক পর্যায়ে দুপুর ১টার দিকে তারা প্রধান সড়কে নেমে আসেন। তাদের উপস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যায় প্রগতি সরণীর যান চলাচল।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,000SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ