চাকরির তিন বছর ৩ মাস চাকরিকালীন সময়ে আমি সাধারণ মানুষের কাছে ডিবিকে একটা আস্থার জায়গায় পরিণত করেছি। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ তথা বিশ্বের মানুষ জানে কারো কোনো সমস্যা হলে ডিবিতে গেলে প্রবলেম সলভ হতে পারে। এই মনে করে অসংখ্য মানুষ আমাদের কাছে এসেছেন। আমরা চেষ্টাও করেছি তাদের কাজটা সুন্দরভাবে করে দেওয়ার। যার কারণে সাধারণ মানুষ ডিবির নামটা জানে। আমি চেষ্টা করেছি ডিবিকে একটা আস্থার জায়গায় নিয়ে যেতে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিন্টো রোডের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে গেটে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ডিএমপির সদ্য বিদায়ী ডিবি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
২০২২ সালের ১৩ জুলাই ডিএমপির ডিবির প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পান হারুন অর রশীদ। মিন্টো রোডের ডিবির কার্যালয়ে প্রায় দুপুরে দাওয়াত খাওয়ানো নিয়ে পুলিশের এ উর্ধ্বন কর্মকর্তা সমালোচনার জন্ম দেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে প্রায়ই ট্রল হতে দেখা যেতো। সর্বশেষ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে রাখাকালীন খাওয়ানোর একটি ছবি ভাইরাল হয়। পরে আদালতও এমন কাÐকে মশকরা বলে মন্তব্য করেন। এরই মধ্যে পুলিশের এ কর্মকর্তাকে গতকাল বুধবার বিকালে ডিবি থেকে সরিয়ে অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) পদে বদলি করা হয়।
নতুন দায়িত্ব নিয়ে অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমার উপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে আরেকটি জায়গায় পদায়ন করেছেন। ডিএমপিতে আমাকে বিস্তৃত পরিসরে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। মানুষের শেষ ভরসাস্থলের জায়গা থানা। থানা যেন মানুষকে সেবা দিতে পারে সেই লক্ষ্যে আমি চেষ্টা করবো সাধারণ মানুষ থানায় আসে ও সেবাটা পায়। যেকোনো ঘটনায় থানায় গিয়ে জিডি-মামলা করতে পারে। আমি চেষ্টা করবো থানাকে সাধারণ মানুষের আস্থায় নিয়ে যেতে।
হারুন অর রশীদ বলেন, আমি ৩ বছর ৩ মাস ডিবিতে কাজ করেছি। আপনারা সব সময় আমার পাশে ছিলেন। আমি চেষ্টা করেছি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ মেনে ডিবিকে সাধারণ মানুষের আস্থার দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে।
এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, ডিবিতে থাকাকালীন সময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। মতিঝিলে আওয়ামী লীগ নেতা টিপু হত্যাকাÐ থেকে শুরু করে এমপি আনার হত্যার মামলাসহ অসংখ্য খুনের ঘটনায় নির্ভুলভাবে তদন্ত করে সাক্ষ্যপ্রমাণ নিয়ে মামলার ক্লু বের করেছি। আমরা কোনো নিরীহ মানুষকে গ্রেপ্তার করিনি। আর প্রভাবশালী ব্যক্তি যত বড় ক্ষমতাসীন হোক না কেন জড়িত থাকলে তাকেও ছাড় দেয়নি।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নাশকতা-সহিংসতা ও হত্যাকাÐের ঘটনায় মামলা হয়েছে। কেউ যদি নির্দোষ প্রমাণিত হয় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হবে না। যারা ঘটনার সঙ্গে প্রকৃতপক্ষে জড়িত, যারা আগুন লাগিয়েছে, মেট্রোরেলে ভাংচুর-অগ্নিকাÐ করেছে, রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি ভবনে আগুন লাগিয়েছে ও পুলিশ সদস্যকে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে এসব ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কেউকেই ছাড় দেয়া হবে না।