কোটা সংস্কারের আন্দোলন পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন ও মিছিল করেছে আওয়ামী ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ব্যানারে এ কর্মসূচী পালন করেন তারা। সমিতির মিলনায়তনে প্রথমে সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি সংবাদ সম্মেলন করেন। তার বক্তব্য শেষের আগেই ¤েøাগান দিয়ে মিলনায়তনে প্রবেশ করেন আওয়ামী পন্থী আইনজীবীরা। এ সময় পাল্টা শ্লোগান দেয় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। পাল্টাপাল্টি শ্লোগানে কিছুক্ষণের জন্য উত্তপ্ত হয় পরিবেশ। তবে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এর আগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির আওয়ামী ও বিএনপিপন্থীরা পৃথক পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেন।
প্রথমে সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, কোটা সংস্কারের আন্দোলনের পর সরকার এরই মধ্যে কয়েক লাখ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। প্রায় ১৩ হাজার ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করেছে। বাসা-বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ছাত্রদের গ্রেপ্তার করছে। এ আন্দোলনকে ‘রাজনৈতিক রং’ দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, জাতিসংঘের তত্ত¡াবধায়নে কোটা আন্দোলনে প্রতিটি হত্যাকান্ড ও আহতদের ব্যাপারে তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। আমরা মনে করি যে, এই আন্দোলনে শতশত মানুষকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী ও বেকার যুবক এবং শিশুদের আহত করা হয়েছে এবং সরকার একই কার্যক্রম এখনও অব্যাহত রেখেছে। এই সকল গণহত্যা ও গুলি করার নির্দেশ দাতা মন্ত্রী, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ জড়িত সকল ব্যক্তিদের বিচার করার জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি। এছাড়া দ্রæত কারফিউ প্রত্যাহার ও সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবিসহ সব বিশেষ বাহিনী প্রত্যাহার, ইন্টারনেট পুরোপুরি চালু করা, গণমাধ্যমের ওপর সরকারি হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবি জানান তিনি।
অপরদিকে দ্বিতীয় সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, কোটা আন্দোলনের সময় সাধারণ ছাত্রদের ওপর ভর করে বিএনপি-জামায়াত-শিবির সারা দেশে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় এবং রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করে। বর্তমানে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারী বিএনপি-জামায়াত দেশ ও জনগণের জানমালের ক্ষতি করে দেশকে একটি মৌলবাদী ও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে তৎপর। তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত চক্র সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছিলো। কিন্তু তাদের সেই ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। এই অশুভ শক্তি চায় নানাভাবে এই ষড়যন্ত্রকে জিইয়ে রাখতে। কিন্তু আইনজীবীরা সেই ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবে না। এ সময় বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহবায়ক অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন প্রমুখ আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটিতে সভাপতিসহ চারটি পদে জয়ী হয় বিএনপিপন্থীরা। আর সম্পাদকসহ ১০টি পদে জয়ী হন আওয়ামী পন্থী আইনজীবীরা।