কোটা সংস্কারের চলমান আন্দোলনে গত সোমবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা পদত্যাগ করছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত শতাধিক নেতাকর্মী ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছেন।
পদত্যাগকারী নেতাকর্মীরা বলছেন, “যেই ছাত্র সংগঠন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালায়, নারী শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা করে, তারা সুস্থ মস্তিষ্কের কেউ নয়। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা অনুচিত।” তবে ছাত্রলীগের দাবি, “আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা দল বেধে রুমে গিয়ে গিয়ে তাদেরকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিরুপায় হয়ে সেগুলো পোস্ট দিতে বাধ্য হচ্ছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদত্যাগকারীদের মধ্যে- সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নুরুল ইসলাম হৃদয়, একই অনুষদের বিষয়ক উপ সম্পাদক জেবা সায়ীমা, সার্জেন্ট জহরুল হক হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি ওয়াসিক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সহ সভাপতি হাসিবুল হাসান হাসিব, শামসুন নাহার হল ছাত্রলীগের উপ-পাঠাগার সম্পাদক ইসরাত জাহান সুমনা, বিজয় একাত্তর হল শাখার গ্রন্থনা ও প্রকাশনা উপসয়ম্পাদক শাহ সাকিব সাদমান প্রান্ত, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের অর্থ সম্পাদক জুয়েনা আলম মুন, নাট্য ও সাহিত্য সম্পাদক মেহেরুন্নিসা মিম, একই হলের আইন সম্পাদক সিরাজাম মনিরা তিশাসহ বিভিন্ন হল এবং অনুষদের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেও অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন।
বিজয় একাত্তর হলের সহ-সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করা শিপন মাহমুদ ফেসবুকে লিখেছেন, “আমি চলমান ছাত্র-আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান করছি। ন্যায়ের পক্ষে থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শোকজ খাওয়া এবং মুচলেকার মুখে পড়া ছাত্র আমি। আমি আজীবন নজরুল। প্রতিবাদ আমার রক্তে। আমি আজন্ম প্রতিবাদী পুরুষ। আমি মো. শিপন মিয়া, সহ-সভাপতি, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। চলমান যৌক্তিক ছাত্রআন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন প্রদান করে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বিজয় একাত্তর হল-এর সহ-সভাপতির পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলাম। অন্যায় আর শিপন এক লাইনে থাকে না।”
এ ব্যাপারে জানতে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তানভীর হাসান সৈকত বলেন, “আন্দোলনকারী নেতাকর্মীরা ১০/১২ জন করে রুমে গিয়ে জোর করে তাদেরকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হচ্ছে এবং সেগুলো ফেসবুকে চাপ দিয়ে পোস্ট করাচ্ছে।”