ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে প্রথমে নেয়া হয় লিবিয়ায়। এরপর একটি চক্রের হাতে জিম্মি করে দেশে ফোন দেয়া হয়। লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করা হয়। দেশেরই একটি চক্র জড়িত। এরকম অভিযোগ তদন্ত করে সিআইডি মাহবুব পাঠান নামে এক ব্যক্তিকে গত ২৮ জুন হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে।
গতকাল মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, মাহাবুব পাঠান দীর্ঘদিন ধরে স্বপরিবারে লিবিয়ায় অবস্থান করে লিবিয়ার বেনগাজীর বাংলাদেশী কমিউনিটিকে নেতৃত্ব প্রদানের আড়ালে মানব পাচার চক্র পরিচালনা করছিলো। চক্রটি মিলন বেপারী ও অন্যান্য ভিকটিমদেরকে আমিরাত এয়ারলাইন্সের বিমানে করে প্রথমে দুবাই নিয়ে যায়। এরপর দুবাই হতে বিমানযোগে মিশর হয়ে লিবিয়ার বেনগাজী নিয়ে যায়। তাদেরকে লিবিয়ার বেনগাজীতে মূলহোতা মাহাবুব পাঠান ও তার সহযোগিরা ক্যাম্পে আটক রাখে। শারীরিক নির্যাতন করে। পরবর্তীতে সেই নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে ভিকটিমদের পরিবারের নিকট পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এভাবে এই চক্রটি ৬৪ জন বাংলাদেশীকে লিবিয়ার বেনগাজীতে একটি ক্যাম্পে আটকে রেখে নির্যাতন চালায়।
তিনি আরো বলেন, ২০২১ সালের ১৭ মে ভূমধ্যসাগরে তিউনিসিয়া উপকূলে মাহাবুব পাঠানের চক্রের শিকার ৬৪ বাংলাদেশিসহ সর্বমোট ১০৪ জন অভিবাসী ভাসতে থাকা অবস্থায় উদ্ধার হন। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহায়তায় তিউনিসিয়ায় থাকা এসব বাংলাদেশিকে ফেরত আনা হয়। তাদের মধ্যে একজন ভ‚ক্তভোগী মিলন বেপারী (২৩)। দেশে ফিরে মিলন বেপারী শরীয়তপুরের নড়িয়া থানায় মাহবুব পাঠানসহ তার চক্রের বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে মানবপাচার আইনে একটি মামলা করে। মামলায় অভিযোগ করা হয়, লিবিয়ার বেনগাজীতে মাহবুব পাঠানের ক্যাম্পে তাকে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে দেশে লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ২০২১ সালে তিন দফায় মাহবুবের দেয়া ব্যাংক একাউন্টে ১০ লাখ টাকা জমা দেয়া হয়। মুক্তিপণের ওই টাকা নেয়ার জন্য মাহবুব পাঠান দেশে এসেছিল। পরে গোপনে দেশ ত্যাগের আগে গত ২৮ জুন হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে মাহবুব আদালতে এ সংক্রান্ত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।