রাজধানীর শাহবাগ থানাধীন পরীবাগে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আবদুর রহমানের বাসার লিফটে লঙ্কাকান্ড ঘটেছে। লিফটের ভেতরে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিচালক-প্রশাসনকে একই অধিদপ্তরের জেলা কর্মকর্তা পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছেন। এই ঘটনায় প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) মলয় কুমার শুর বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (লিভ, ডেপুটেশন অ্যান্ড ট্রেনিং রিজার্ভ) মো. আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি হত্যা চেষ্টার মামলা করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে পরীবাগের দিগন্ত টাওয়ারে মন্ত্রীর বাসার লিফটে এ ঘটনা ঘটে।
শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করেন, মন্ত্রীর ডাকে তিনি গত বৃহস্পতিবার রাতে পরীবাগে যান মলয় কুমার। রাত ৯ টার দিকে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তিনি লিফটে বাসার নীচে নামেন। লিফট থেকে বের হওয়ার মুখে আজিজুল তাকে আঘাত করেন। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা ও নাকে আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। মলয় কুমার এসময় চিৎকার করলে নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে। তবে আজিজুল তাকে আরও ভয়ভীতি দেখিয়ে ও হত্যার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় মলয়কে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেওয়া হয়। আজিজুলের আঘাতে মলয় কুমারের মুখমন্ডল ফেটে যায়, চিকিৎসক তাতে সেলাই দিয়েছে। এ ছাড়া বুক ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে তার আঘাত রয়েছে।
শাহবাগ থানার ওসি মোস্তাজিরুর রহমান বলেন, এঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে মলয় কুমার বলেন, আজিজুল আমাকে আচমকা হামলা করে। কেন তিনি এরকম করেছে এটা তিনিই বলতে পারবেন। বিষয়টি আমার উর্ধ্বাতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি, পাশাপাশি মামলাও করেছি। এখন আইনগত বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবেন।
তবে মলয় কুমারের ধারণা, আজিজুল ইসলামকে মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার পরিচালক পদমর্যাদার একটি পদে পদায়ন করে। যেহেতু তিনি (মলয়) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন), তাই এ বিষয়ে মন্ত্রীকে মতামত দিয়েছিলেন। বিভাগীয় মামলায় শাস্তিপ্রাপ্ত অবস্থায় আজিজুলের নতুন পদায়ন হয়। আইন অনুযায়ী তিনি কথা বলেছেন। এটা কারও পক্ষে যেতে পারে, বিপক্ষেও যেতে পারে। এ কারণে আজিজুল তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে থাকতে পারেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে মন্ত্রী আবদুর রহমানকে ফোন করা হলে তার ব্যক্তিগত সহকারি ফোনটি রিসিভ করেন। তিনি বলেন, স্যার, অসুস্থ বিষয়টি নিয়ে এখন কথা বলতে পারবেন না।
এদিকে ঘটনার পর আজিজুলের নতুন পদায়ন বাতিল করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার তাকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অ্যান্ডোপ্যারাসাইটোলজি অনুবিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে চলতি দায়িত্বে পদায়ন করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতেই তার পদায়ন বাতিল করে মন্ত্রণালয়।
এর আগে আজিজুল ২০২৩ সালের ১৩ অক্টোবর তৎকালিন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. এমদাদুল হক তালুকদারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছিলেন আজিজুল ইসলাম। এই ঘটনায় তাকে বিভাগীয় শাস্তি দেওয়া হয়। দুটি বিভাগীয় মামলা তার পদাবনত করে পঞ্চম গ্রেডের জুনিয়র কর্মকর্তা পদমর্যাদার দেওয়া হয়।