এবার রজধানীতে ২০টি কোরবানির পশুর হাট বসছে। ১১টি হাট বসছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ও উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় বসছে ৯টি। অস্থায়ী হাটগুলোতে বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিক্রি শুরু হলেও ইতিমধ্যে স্থায়ী হাটগুলোতে বিক্রি শুরু হয়েছে। সবচেয়ে বড় হাট গাবতলী ও সারুলিয়ার স্থায়ী হাট পশুতে ভরে গেছে। তবে কিছু হাটে পশুর হাট বসানোর নিয়ম ভঙ্গ করার অভিযোগ উঠেছে ইজারাদারদের বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খিলক্ষেত এলাকার মস্তুল চেকপোস্ট-সংলগ্ন পশ্চিমপাড়ার খালি জায়গায় অস্থায়ী পশুর হাট বসাতে ইজারা দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওই জায়গায় হাট না বসিয়ে ৩০০ ফুট সড়কের সঙ্গে যমুনা হাউজিং ও ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গায় কোরবানির পশুর হাট বসিয়েছেন ইজারাদার। সর্বশেষ ২০২১ সালে সেখানে হাটের ইজারা দিয়েছিল ডিএনসিসি। জমির মালিক ও এলাকাবাসীর আপত্তিতে গত দুই বছর যমুনা হাউজিং এলাকায় হাট বসানোর অনুমতি মেলেনি। ইজারার শর্ত ভেঙে ইচ্ছামতো জায়গায় হাট বসানোয় স্থানীয়দের পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়বেন সড়কে চলাচলকারীরা। ডিএনসিসি জানিয়েছে, নির্ধারিত জায়গা ছাড়া হাট বসানো হলে তা ভেঙে দেওয়া হবে।
ইতিমধ্যে বিশাল এলাকাজুড়ে গরু বাঁধার জন্য বাঁশের খুঁটি বসানো হয়েছে। হাসিল কাউন্টারে টানানো ফেস্টুনেও লেখা, ‘মস্তুল চেকপোস্ট-সংলগ্ন পশ্চিমপাড়ার খালি জায়গায় অস্থায়ী পশুর হাট’। হাট ইজারাদারের এক প্রতিনিধি জানান, গত তিন দিনে ২০০ ট্রাক গরু এসেছে। তাদের হাটে এক লাখ গরু রাখার ধারণক্ষমতা রয়েছে। ইতোমধ্যে ক্রেতারা হাটে এসে গরু দেখছেন। কেউ কেউ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। মস্তুল পুলিশ চেকপোস্ট-সংলগ্ন এ হাটটির ইজারা ধরা হয়েছে ১ কোটি ৭ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু যমুনা হাউজিংয়ে ২০২১ সালে হাটটি ইজারা দেওয়া হয়েছিলো প্রায় ২ কোটি টাকা। এক জায়গায় ইজারা নিয়ে অন্য জায়গায় হাট বসায় রাজস্ব হারাচ্ছে সিটি করপোরেশন।
স্থানীয়রা জানান, জোরপূর্বক ইজারাদার এখানে ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গায় হাট বসিয়েছেন। এ নিয়ে জমির মালিকরা প্রকাশ্যে অভিযোগ করতে পারছেন না। এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম বলেন, ‘এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। আমাদের নির্ধারিত জায়গা ছাড়া কোথাও হাট বসলে তা ভেঙে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
আবাসিক এলাকায় কোরবানির পশুর হাট: রাজধানীতে কোরবানির পশুর অস্থায়ী হাটগুলোর বেশিরভাগই আবাসিক এলাকা, সড়ক, ফুটপাথ, খেলার মাঠ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বসছে। এতে একদিকে যেমন যানজট তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে ভোগান্তিতে পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকার মেরাদিয়া বাজার সংলগ্ন খালি জায়গায় কোরবানি পশুর হাট বসানোর কথা বলা হলেও এ হাটের বেশিরভাগ পশু রাখা হয় বনশ্রী আবাসিক এলাকার অলিগলিতে। বনশ্রী এলাকার বাসিন্দারা এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের হাটগুলো হল- খিলগাঁও রেলগেইট মৈত্রী সংঘ ক্লাবসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, হাজারীবাগের ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি মাঠ, পোস্তগোলা শ্মশানঘাট পাশের খালি জায়গা, বনশ্রীর মেরাদিয়া বাজারের পাশের খালি জায়গা, লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব ও কমলাপুর স্টেডিয়ামের পাশের খালি জায়গা, দনিয়া কলেজের আশপাশের খালি জায়গা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনালের পাশের খালি জায়গা, আমুলিয়া মডেল টাউন, রহমতগঞ্জ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, শ্যামপুর-কদমতলী ট্রাক স্ট্যান্ডের পাশের খালি জায়গা এবং ডেমরার সারুলিয়ায় সিটি করপোরেশনের স্থায়ী হাট।
ঢাকা উত্তর সিটির মধ্যে সবচেয়ে বড় হাট হল গাবতলী হাট। পাশাপাশি আগের মত থাকছে অস্থায়ী হাট। অস্থায়ী হাটগুলো হল- উত্তরা দিয়াবাড়ীর ১৬ ও ১৮ নম্বর সেক্টরের পাশের খালি জায়গা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশের খালি জায়গা, মস্তুল চেকপোস্ট এলাকা, মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা, ভাটারার সুতিভোলা খালের কাছের খোলা জায়গা, মোহাম্মদপুরের বছিলায় ৪০ ফুট সড়কের পাশের খালি জায়গা, ভাটুলিয়া সাহেব আলী মাদ্রাসা থেকে রানাভোলা ¯øুইচগেট পর্যন্ত খালি জায়গা ও দক্ষিণখানের জামুন এলাকার খালি জায়গা।