বিদেশে কর্মী নিয়োগ অনুমোদনের জন্য নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রায় ৪ হাজার স্মার্ট কার্ড দেয়ার অভিযোগে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত মঙ্গলবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করা হয়। দুদকের সহকারী পরিচালক রণজিৎ কুমার কর্মকার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন, বিএমইটির সিস্টেম অ্যানালিস্ট মো. সাইদুল ইসলাম এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. সাইফুল ইসলাম।
দুদক সূত্র জানায়, বিদেশে কর্মী নিয়োগে বিএমইটি থেকে বহির্গমন ছাড়পত্র পেতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগে। এরপর সেই অনুমতির কপি যায় বিএমইটিতে। সেখানে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন মোতাবেক বিএমইটির ইমিগ্রেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সফটওয়্যারে বিভিন্ন ডেটা দেয়া হয়। এরপর বহির্গমন বা কল্যাণ ফিসহ অন্য ফি এবং আয়করের পে-অর্ডার ও চালান কপি জমা নিয়ে পর্যায়ক্রমে যাবতীয় কাজ সেরে বহির্গমন ছাড়পত্র আর স্মার্ট কার্ড নিতে হয় বিএমইটি থেকে। এই পুরো প্রক্রিয়ায় কোনো সংশোধন, সংযোজন বা পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে তা কেবল আইটি শাখার সিস্টেম অ্যানালিস্ট করতে পারেন। অন্য কারও এ বিষয়ে কিছু করার এখতিয়ার নেই।
দুদকের এজাহারে বলা হয়, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নিয়োগ এজেন্সিকে দেয়া বহির্গমন ছাড়পত্রের সংখ্যার সঙ্গে বিএমইটির ওয়েবসাইটে ক্লিয়ারেন্স রিপোর্টে আরব আমিরাতের জন্য ইস্যু করা ছাড়পত্রের সংখ্যায় পার্থক্য রয়েছে। অনেক সংখ্যা সম্পাদনা করে কমানো বা মুছে ফেলা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া নিয়োগ অনুমতির সংখ্যার সঙ্গে মিল রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।
দুদক অনুসন্ধানে জানতে পারে, আটটি রিক্রুটিং এজেন্সির নামে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ১২ মে পর্যন্ত মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে ২ হাজার ৯৬০টি। কিন্তু বিএমইটির সফটওয়্যার থেকে স্মার্ট কার্ড ইস্যু করা হয়েছে ৬ হাজার ৯৩৮টি। অর্থাৎ অতিরিক্ত ৩ হাজার ৯৭৮টি স্মার্ট কার্ড বিএমইটি থেকে অবৈধভাবে দেয়া হয়।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ইমিগ্রেশন ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারে সাইদুল ইসলাম বিএমইটির সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নিয়ম অনুযায়ী সফ্টওয়্যারের ডেটাবেজে একমাত্র এক্সেস ছিল তার। সেই সুযোগে তিনি অফিস সহকারী সাইফুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে স্মার্ট কার্ড ইস্যু করেন। যা দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তি যোগ্য অপরাধ।