বান্দরবান জেলা কারাগার থেকে ৩১ জন কেএনএফ সদস্যকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। এদের মধ্যে পুরুষ ১৫ জন ও মহিলা ১৬ জন কেএনএফ সদস্য রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব ও পুলিশের কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বান্দরবান জেলা কারাগার থেকে তাঁদের চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২ ও ৩ এপ্রিল বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় ব্যাংক ডাকাতি, পুলিশ ও আনসারের ১৪টি অস্ত্র ৪১৫টি গুলি লুটের ঘটনায় যৌথবাহিনীর সমন্বিত অভিযানে বিভিন্ন সময় সন্দেহজনক গ্রেপ্তার কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্টের ( কেএনএফ) ৯৬ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে বান্দরবান জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
বান্দরবান জেলা কারাগারের জেল সুপার মোঃ জান্নাত-উল ফরহাদ দৈনিক ইত্তেফাককে জানান, এ বছরের এপ্রিল মাসে রুমা থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি অস্ত্র ও টাকা লুট এবং ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের ঘটনায় বান্দরবান জেলা কারাগারে থাকা ৩১ কেএনএফ সদস্যকে জেলখানায় স্থান সংকুলান না হওয়ায় চট্টগ্রাম কেন্ত্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৫ জন নারী ও ১৬ জন পুরুষ সদস্য। তিনি জানান আদালতে হাজিরা থাকলে তাঁদের আবার নিয়ে আসা হবে বা ভার্চুয়ালী হাজিরা নেয়া হবে।
এদিকে রুমা রোয়াংছড়িতে কেএনএফের বিরুদ্ধে একাধিকবার মানববন্ধন হয়েছে।সর্বশেষ গত সোমবার রোয়াংছড়ি উপজেলায় সর্বস্তরের জনসাধারণের ব্যানারে মানববন্ধনে স্বাভাবিক জীবনে না ফিরলে কেএনএফকে প্রতিহতের হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে।উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি নেইটন বুইতিং বম লিখিত বক্তব্যে কেএনএফকে একটি অবৈধ সশস্ত্র সংগঠন উল্লেখ করে মানবন্ধনে বলেন, সারা দেশে শান্তিপূর্ণ ও সম্প্রীতির জেলা হিসেবে পরিচিত বান্দরবান বর্তমানে আতঙ্কের জেলা হিসেবে পরিনত হয়েছে।তাদের অপকর্মের কারণে রুমা রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় শত শত পরিবার না খেয়ে জঙ্গলে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।বিশেষ করে বম জনগোষ্ঠীর মানুষ।কেএনএফের তৎপরতায় ১২ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে।বম জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এসব বিদ্যালয়ে নিরাপত্তাজনিত কারণে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকেরা যেতে ভয় পাচ্ছেন বলে বন্ধ হয়ে গেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত ৪৯জন শিক্ষককে বসে বসে বেতন দেয়া হচ্ছে। ১২টি বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্রছত্রীর সংখ্যা সাড়ে চার শত। মানববন্ধনে কেএনএফের প্রতি তিনটি বার্তা দেওয়া হয়। ২ ও ৩ এপ্রিল ব্যাংক ডাকাতির সময় পুলিশ ও আনসারের লুট করা ১৪টি অস্ত্র ও গুলি ফিরিয়ে দেওয়া, পাহাড়ে অবৈধ সশস্ত্র কর্মকান্ড সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করা এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা। অন্যথায় কেএনএফকে প্রতিহতের হুশিয়ারি দেয়া হয়।