ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি অভিযোগ করেছে, রাষ্ট্রপরিচালনার ক্ষেত্রে সকল অর্থনৈতিক ক্ষমতা অলিগার্কির হাতে কেন্দ্রীভ‚ত। তাদের স্বার্থ রক্ষার্থেই দেশের সকল অর্থনৈতিক নীতি পরিচালিত হচ্ছে। যার কারণে, কেবল মূল্যস্ফীতিই নয়; দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দুর্নীতি, অর্থপাচার, ব্যাংক খাতে লুট-নৈরাজ্য এবং ঋণখেলাপির বিশাল পাহাড় জমেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর দলীয় পর্যালোচনা তুলে ধরতে গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে একথা বলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, দুর্নীতি প্রতিরোধ, অর্থপাচার রোধ, ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, ঋণখেলাপি ও আর্থিক খাতের দুষ্কর্মের হোতাদের বিচারের দাবিতে আগামী ২৫ জুন দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ওয়ার্কার্স পার্টি। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা তপন দত্ত চৌধুরী ও আবুল হোসাইন, শ্রমিক নেতা আমিরুল হক আমিন, কেন্দ্রীয় মিডিয়া বিভাগের আহŸায়ক মোস্তফা আলমগীর রতন প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অর্থমন্ত্রী মূল্যস্ফীতির কারণ হিসেবে বৈশি^ক পরিস্থিতির কথা উলেখ করেছেন। কিন্তু সেই বৈশি^ক বাস্তবতায় ভারত ও শ্রীলংকা মূল্যস্ফীতি অনেক নীচে নামিয়ে আনতে পারলেও বাংলাদেশ কেন ব্যর্থ হয়েছে তা বলেননি। এব্যাপারে যে আইএমএফের দ্বারস্থ হয়েছে সরকার, তাদের কথাও মানেনি। ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনি ইশতেহারের কথা উলেখ করে বাজেটে কিছু নীতিবাক্য ও উপরলেপা কথা বলা হলেও এই সংকটকালে যে দৃঢ়তার সাথে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা তা বাজেটে অনুপস্থিত।
সংবাদ সম্মেলনে ওয়ার্কার্স পার্টি পাঁচটি দাবি তুলে ধরে। এগুলো হলো- নিত্যপণ্যের মূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে এযাবত গৃহীত ব্যবস্থার পাশাপাশি পূর্ণ রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ-সম্পদ অর্জনকারীদের খুঁজে বের করে শাস্তি দিতে এবং তাদের অর্থ-সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার জন্য ‘বিশেষ কমিশন’ গঠন, ব্যাংকিং খাতে নৈরাজ্য ও লুট বন্ধ করে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে ‘ব্যাংক কমিশন’ গঠন, অর্থপাচার রোধ এবং পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ঋণ খেলাপের ক্ষেত্রে অসঙ্গতিপূর্ণ ব্যবস্থাদি রোধ করে ঋণ খেলাপিদের চিহ্নিত করে অর্থ আদায় ও ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বিচারের ব্যবস্থা করা।