দেশের ক্রিকেটে একজন বিশেষজ্ঞ লেগ স্পিনারের শূণ্যতা ভোগাচ্ছিলো অনেকদিন যাবৎ। তা পূরণে বিসিবিও কম তৎপরতা দেখায়নি। বিভিন্ন ভাবে চেস্টা করেছে একজন দক্ষ লেগী বের করে আনার। তবে তা সফলতার মুখ দেখেনি। একের পর এক ক্রিকেটার সুযোগ পেয়েও হতাশ করেছেন নির্বাচকদের। তবে সেখানে আশার আলো ফুটিয়েছেন রিশাদ হোসেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করে গেল কয়েক সিরিজ ধরে দলের সঙ্গেই দেখা যাচ্ছে তাকে। সময়ে সময়ে দলের হয়ে মাঠেও নামছেন তিনি। লেগ স্পিন বোল করার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও ঝড় তোলার সামর্থ্য রয়েছে তার। যা তিনি দেখিয়েছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এবং পরবর্তীতে গেল মার্চ মাসে লঙ্কানদের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচেও। তাতে সুযোগ পান নবম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টাইগার স্কোয়াডে। আর নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে এসে প্রথম ম্যাচেই করেছেন বাঁজিমাত। তুলে নিয়েছেন তিন উইকেট হয়েছেন ম্যাচ সেরাও।
গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের নায়ক রিশাদ। লঙ্কানদের ১২৪ রানে আটকে ফেলার পেছনে বড় অবদান রেখেছেন তিনি। বল হাতে নির্ধারিত ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে তুলে নেন গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট। সম্ভাবনা জাগায় হ্যাটট্রিকেরও। মুলত এক ওভারেই ইনিংসের মোর ঘুড়িয়েছেন তিনি। ইনিংসের ১৫তম ও নিজের তৃতীয় ওভারে এসে প্রথম বলেই নিয়েছেন চারিথ আসালাঙ্কার উইকেট। পরের বলে রিশাদের শিকার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। পরবর্তীতে নিজের চতুর্থ ওভারে থিতু হয়ে থাকা ধনঞ্জয় ডি সিলভাকেও ফেরান তিনি। তাতে শেষ দিকে রান তোলার সুযোগ পায়না লঙ্কান ব্যাটাররা। পরে ম্যাচ শেষে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়ে রিশাদ বলেন, ‘পিচ ভালো ছিল। আমি নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টাটা করেছি। নিজের শক্তির জায়গায় অটুট থেকেছি… (হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনার সময়) স্বাভাবিক বলই করার চেষ্টা ছিল, সামর্থ্যের সবটুকু দিয়েছি।’
এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে রিশাদের প্রসঙ্গে টাইগার অধিনায়ক শান্ত বলেন, ‘অসাধারণ বোলিং করেছেন। আমার মনে শেষ কয়েকটা সিরিজ ধরেই ও ভালো বল করে আসছে। যেভাবে ও অনুশীলন করেন..ওর প্রস্তুতি খুবই ভালো এবং সব সময় স্ট্রাগল করি যে আমাদের একটা লেগ স্পিনার নেই। তো ঐ জায়গাটা আমাদের পূরণ হয়েছে। আমি আশা করবো যে সামনের ম্যাচ গুলোতেও ও এইভাবে অবদান রাখবে।’
১৪ ওভার শেষে লঙ্কানদের সংগ্রহ ছিলো তিন উইকেট হারিয়ে ১০০ রান। উইকেটে প্রায় থিতু হওয়ার চেস্টায় ছিলেন লঙ্কান দুই ব্যাটার চারিথ আসালাঙ্কা ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা সিলভা। সেসময় রিশাদের হাতে বল তুলে দেন শান্ত। নিজের তৃতীয় ওভারে এসে পর পর দুই উইকেট তুলে নেন তিনি। প্রথম বলে আসালাঙ্কা ও দ্বিতীয় বলে হাসারাঙ্গা। সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন হ্যাটট্রিকেরও। তবে তা কাটিয়েছিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। সেসময় রিশাদকে বোলিংয়ে আনার বিষয়ে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘সব সময়ই ওর (রিশাদ) উপর আমার আত্মবিশ্বাস থাকে। কারণ ও উইকেট নেওয়ার দক্ষতা সম্পূন্ন বোলার। আমরা সবাই জানি লেগ স্পিনারকে মারে খুব একটা সহজ নয়। দুই একটা বাউন্ডারি হতে পারে তবে সবসময়ই উইকেট নেওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে। তো ঐ জিনিসটাই আমি করার চেস্টা করেছি। অধিনায়ক হিসেবে যে জিনিস আমি ওর কাছে চেয়েছিলাম, একটা দুইটা উইকেট বের করে দিবে ও সেটাই করে দিয়েছে।’