আগামী জুলাই মাস থেকে এক বছরের জন্য কালো টাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ দেওয়া হয়েছে। নগদ টাকা ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বিনা প্রশ্নে বৈধ বা সাদা করা যাবে। একইভাবে জমি, ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট কিনেও এলাকাভেদে নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে টাকা সাদা করা যাবে। একেক এলাকার জন্য বর্গমিটার অনুসারে নির্দিষ্ট কর দিতে হবে।
গতকাল জাতীয় সংসদে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় এ ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
অনেক ক্ষেত্রে কোম্পানির কিছু অপ্রদর্শিত আয় ও পরিসম্পদ দেখানোর ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্ট হয়েছে। এমন ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোকে এই অপ্রদর্শিত অর্থ ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কোম্পানির অপ্রদর্শিত সম্পদ নির্দিষ্ট হারে কর দিয়েও বৈধ করার সুযোগ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। দুই বছর আগে ১০ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তেমন সাড়া না পাওয়ায় পরে এ সুযোগ বাতিল করা হয়।
এর পরের বছর দেশ থেকে পাচার করা টাকা ফেরত আনার সুযোগ দেওয়া হলেও কেউ সেই সুযোগ নেননি। এক বছর বিরতির পর আগামী অর্থবছরে আবারও ঢালাওভাবে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হলো। এনবিআরের সূত্রগুলো বলছে, এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে অপ্রদর্শিত প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা ঘোষণায় এসেছে, অর্থাৎ এই পরিমাণ অর্থ বৈধ করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, চলমান বৈশ্বিক সংকটের কারণে পরিবর্তিত অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রাখা আবশ্যক। অর্থনীতিতে কার্যকর চাহিদা সৃষ্টি এবং তা বজায় রাখার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত সরকারি ব্যয় নির্বাহের জন্য আমাদের অধিক পরিমাণ রাজস্ব জোগান দিতে হবে। একই সঙ্গে বেসরকারি খাতেও অর্থনৈতিক কর্মকাÐ গতিশীল রাখতে হবে।
তিনি বলেন, ডেটা ভেরিফিকেশন সিস্টেম (ডিভিএস) চালু হওয়ার ফলে বিভিন্ন কোম্পানির অপ্রদর্শিত আয় ও পরিসম্পদ প্রদর্শনে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া, রিটার্ন দাখিলে করদাতার অজ্ঞতাসহ অনিবার্য কিছু কারণে অর্জিত সম্পদ প্রদর্শনে ত্রæটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে।
এই অবস্থায় করদাতাদের আয়কর রিটার্নে এই ত্রæটি সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হবে। অর্থনীতির মূল স্রোতে অর্থ প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে অর্থমন্ত্রী আয়কর আইনে কর প্রণোদনা সংক্রান্ত একটি অনুচ্ছেদ সংযোজনের প্রস্তাব করেছেন। এই প্রস্তাব অনুযায়ী, ‘দেশের প্রচলিত আইনে যাই থাকুক না কেন, কোনো করদাতা স্থাবর সম্পত্তি যেমন- ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট ও ভ‚মির জন্য নির্দিষ্ট করহার এবং নগদসহ অন্যান্য পরিসম্পদের ওপর ১৫ শতাংশ কর পরিশোধ করলে কোনো কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকারের প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না।’