আসছে বাজেটে ১৫ শতাংশ হারে কর পরিশোধ করে অপ্রদর্শিত অর্থ প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া হতে পারে। বিভিন্ন সময়ে ব্যক্তি পর্যায়ে এই সুযোগ দেওয়া হলেও এবার প্রথমবারের মতো ব্যক্তির পাশাপাশি কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান এই সুযোগ পেতে যাচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, একটি অ্যামনেস্টি বা সাধারণ ক্ষমাসহ এ সুযোগ দেওয়ার ফলে অর্থের উৎস সম্পর্কে সরকারের কোনো সংস্থা প্রশ্নও করবে না। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার মাত্র ১০ শতাংশ কর পরিশোধ করে এই সুযোগ দেয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সূত্রগুলো জানায়, ওই অর্থবছরে প্রায় ১১ হাজার ৮৩৯ জন ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বৈধ করে। এসব বিনিয়োগ থেকে ২ হাজার ৬৪ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছিল এনবিআর। এর মধ্যে ৭ হাজার ৫৫ জন এনবিআরের অস্থায়ী বিধানের আওতায় ব্যাংকে জমা বা নগদ ১৬ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা বৈধ করেছেন। বাকি টাকা জমি, ফ্ল্যাট বা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হয়েছে। বর্তমান আয়কর আইন অনুযায়ী, যেকোন করদাতা সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ কর দিয়ে এরসঙ্গে ওই করের ১০ শতাংশ জরিমানা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ পান। তবে এর বাইরে প্লট বা ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে এলাকাভেদে নির্দিষ্ট আয়তনের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত কর পরিশোধ করেও টাকা বৈধ করার সুযোগ আছে। বর্তমান আয়কর আইন অনুযায়ী অর্থের উৎস সম্পর্কে সরকারের অন্য সংস্থা প্রশ্ন তুলতে পারে। বর্তমানে ব্যক্তি করদাতাদের সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশ, যা আগামী অর্থবছরে ৩০ শতাংশ করার পরিকল্পনা করছে এনবিআর। আর যদি সরকার সুযোগ দেয়, তাহলে মাত্র অর্ধেক কর দিয়ে অঘোষিত বা অপ্রর্শিত টাকা সাদা করা বা প্রদর্শনের সুযোগ পেতে পারেন এ অর্থের মালিকরা। এ ছাড়া, অর্থনৈতিক অঞ্চল বা হাইটেক পার্কে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এই বিনিয়োগে অ্যামনেস্টি পান বিনিয়োগকারীরা। ২০২০-২১ অর্থবছরে যে সুবিধা দেওয়া হয়েছিল তাতে পুঁজিবাজার, আবাসন, ব্যাংক আমানত, সঞ্চয়পত্র ও নগদে টাকা জমার প্রায় সবগুলো খাতে বিনিয়োগে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ ছিল। এ ছাড়া, প্লট বা ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে এলাকাভেদে নির্দিষ্ট আয়তনের উপর ভিত্তি করে করের হার নির্ধারণ করে জমি ও ফ্ল্যাট ক্রয়ে অপ্রকাশিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়। তবে এই সুযোগ সবচেয়ে বেশি কাজে লাগানো হয়েছে জমাকৃত অর্থের ক্ষেত্রে। চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ ওই সময়ে তাদের অপ্রদর্শিত টাকা বৈধ করেছেন।
বৃহষ্পতিবার আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ব্যয়ের বাজেট উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বাজেট বক্তব্যের শিরোনাম ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’। অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সার্বিকভাবে আগামী বাজেট হবে কিছুটা সংকোচনমূলক। দুই বছর ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির লাগাম টানাই বাজেটে সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। এ জন্য কমিয়ে আনা হবে বাজেট ঘাটতি।