দেশে মোট জনসংখ্যার ৪৮ শতাংশই তরুণ-তরুণী। এর মধ্যে ৩৫ শতাংশ কিশোর-কিশোরীরা জড়াচ্ছে তামাক ব্যবহারে। তামাক পণ্যের প্রচার ও বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ হলেও এর কার্যকর বাস্তবায়নের অভাবে তামাক কোম্পানির কূটকৌশলে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে দেশের তরুণরা। তামাক কোম্পানির মূল টার্গেট দেশে বিশাল জনগোষ্ঠীকে তামাকে আসক্ত করে ব্যবসা করা। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের উচিত তামাক কোম্পানির ছোবল থেকে তরুণদের সুরক্ষা দেওয়া। তাই বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (সংশোধিত ২০১৩) যুগোপযোগী করে তরুণদের রক্ষার দাবি জানিয়েছে ঢাকা আহছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্যামলিস্থ ঢাকা আহছানিয়া মিশন, স্বাস্থ্য সেক্টরের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের (সিটিএফকে), প্রোগ্রামস ম্যানেজার মো. আব্দুস সালাম মিয়া ও ঢাকা আহছানিয়া মিশননের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ।
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইয়ুথ ফোরাম সদস্য মো. তাসনিম হাসান আবীর ও নাসিম হাসান। তারা বলেন, বাংলাদেশে ১৫ বছর ও তদুর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৩৫.৩ শতাংশ। টোব্যাকো অ্যাটলাস এর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সীদের মধ্যে তামাক ব্যবহারকারীর হার ছিল ৬ শতাংশ। অন্যদিকে, ২০১৪ সালে পরিচালিত গ্লোবাল স্কুল-বেজড হেলথ সার্ভে (জিএসএইচএস) অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৩-১৫ বছর বয়সী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৯.২ শতাংশ। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে তামাকপণ্যের প্রচার ও বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ হলেও কার্যকর বাস্তবায়নের অভাবে তামাক কোম্পানির লোভের মুখে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে দেশের তারুণ্য।
অনুষ্ঠানে আহছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং সমন্বয়কারী মারজানা মুনতাহা বলেন, তামাক কোম্পানির কূটকৌশল ও হস্তক্ষেপ মোকাবেলায় এফসিটিসি আর্টিক্যাল ৫.৩ অনুসারে নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী দ্রুত চূড়ান্তকরণের মাধ্যমে বিক্রয়স্থলে তামাকপণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ, ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ বিলুপ্ত, ই-সিগারেটসহ সকল ভ্যাপিংপণ্য নিষিদ্ধ এবং তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম বন্ধসহ আইনের অন্যান্য ধারার কঠোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।