আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়মিত অভিযানে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের কার্যক্রম প্রায় স্তিমিত হয়ে পড়েছে। এজন্য ‘শাহাদাত’ নামে নতুন একটি গ্রæপ তৈরি করে নতুন সদস্য সংগ্রহসহ দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।
আনসার আল ইসলামের রিক্রুটিং শাখার প্রধান মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন (২৫), দুই আঞ্চলিক প্রশিক্ষক জিহাদ হোসেন ওরফে হুজাইফা (২৪) ও আমিনুল ইসলামকে (২৫) গ্রেফতারের পর এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব। শুক্রবার র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৩ এর যৌথ অভিযানে রাজধানীর গুলিস্তান ও নারায়নগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
শনিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, তারা ‘আনসার আল ইসলামের’ সদস্য। আফগানিস্থানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলামে’ যোগাদান করে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত অভিযানে আনসার আল ইসলামের কার্যক্রম প্রায় স্তিমিত হয়ে পড়েছে। তাদের সদস্য সংগ্রহসহ সকল কার্যক্রম পরিচালনা ব্যহত হচ্ছে। এরপর আনসার আল ইসলাম মতাদর্শের ‘শাহাদাত’ নামে নতুন গ্রæপ তৈরি করে নতুন সদস্য সংগ্রহসহ দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে। এই গ্রæপের সদস্য সংখ্যা শতাধিক। ইসমাইল আনসার আল ইসলামের রিক্রুটিং শাখার প্রধান এবং ‘শাহাদাত’ গ্রæপেরও প্রধান হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।
ইসমাইলের বরাতে কমান্ডার আরাফাত জানান, এই গ্রæপটি প্রতিবেশী দেশে আত্মগোপন করা ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত জেএমবির সালেহউদ্দিনের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। গ্রæপের অন্যান্য সদস্যরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছে। তারা বিভিন্ন সময় অনলাইনে বিভিন্ন উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্য দেখে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনের সদস্যদের মাধ্যমে যোগদান করে। পরবর্তীতে তারা আনসার আল ইসলামের নাম ব্যবহার না করে ‘শাহাদাত’ গ্রæপের নামে সদস্য সংগ্রহ ও দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিল।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, তারা বিভিন্ন সময়ে মসজিদ, বাসা বা বিভিন্ন স্থানে সদস্যদের নিয়ে গোপন সভা পরিচালনা করতো এবং সংগঠনের সদস্যদের শারীরিক কসরত প্রশিক্ষণ দিতো। তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত বিশেষত চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, যশোর, সাতক্ষীরাসহ ঢাকার আশেপাশের বিভিন্ন এলাকাকে প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য নির্ধারণ করেছে বলে জানা যায়।
র্যাবের মুখপাত্র বলেন, গ্রেপ্তার ইসমাইল নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিসে অধ্যয়নরত। ১ বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত জঙ্গি নেতা সালেহউদ্দিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সেই সূত্রে সে তার মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে আনসার আল ইসলামে যোগদান করে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে। এক পর্যায়ে তাকে সংগঠনের রিক্রুটিং শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়।