শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আমাদের হতাশার কোনো কারণ নেই। আমাদের কর্মীরা ক্লান্ত, কিন্তু হতাশ নন। এত জেল-জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে তাঁরা এখনো বুক টান করে দাঁড়িয়ে আছে স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য। এই স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা প্রতিবেশীদের নেই, কারও নেই। আর প্রতিবেশীদের দালালি করে বেশি দিন টিকতে পারবেন না। তিনি বলেন,অনেক বছর আগে প্রতীক ছিল ফেলানি। ফেলানি যেমন কাঁটাতারে ঝুলছিল,আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব তেমন কাঁটাতারে ঝুলছে। এই কাঁটাতার কাটতে হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই।
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির নেতা নবী উল্লাহ নবীসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহŸায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য বিশেষ অতিথির রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান,স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্না, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক আনম সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।বিকাল তিনটায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা ১১টা থেকেই ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানার নেতারা ব্যানার সহকারে নয়াপল্টনে আসতে শুরু করেন। বেলা ২টার মধ্যেই লোকারণ্য হয়ে ওঠে পুরো নয়াপল্টন এলাকা। সমাবেশ শেষে মিছিল বের করেন নেতাকর্মীরা। মিছিলটি নয়াপল্টন থেকে পল্টন মোড়ের দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশী বাঁধার কারণে বিজয়নগর মোড় ঘুরে ফকিরাপুল হয়ে পুনরায় নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ের সামনে শেষ হয়।১৯ শর্তে পুলিশ এই সমাবেশের অনুমতি দেয়।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আপনারা যে আচরণ করেছেন ক্ষমতার পরিবর্তন হলে তার ১০ ভাগের একভাগ করলে আপনাদের সাথে তা সহ্য করতে পারবেন? তাই সীমা লঙ্ঘন করবেন না। তাই বলছি জনগণের সাথে থাকুন, ন্যায়ের পথে থাকুন।’বিএনপি চলছে রিমোট কনট্রোলের মাধ্যামে’- বলে আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন তার জবাবে গয়েশ্বর রায় বলেন,‘হ্যাঁ, বিএনপি তো রিমোট কন্ট্রোলেই চলে। রিমোট কন্ট্রোলটা কার হাতে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার হাতে, নয়তো বা তারেক রহমানের হাতে। কিন্তু আপনাদের রিমোট কন্ট্রোলটা কোথায়? আপনার সরকারের রিমোট কন্ট্রোলটা কার হাতে? মোদির হাতে, না অজিত দোভালের হাতে, না র-এর প্রধানের হাতে। তাদের রিমোট কন্ট্রোলেই তো আপনাদের চলতে হয়। কাদের সাহেবের কথায় মনে হয় ডেমোক্রেসি মিনস বাই দ্য ইন্ডিয়া, ফর দ্য ইন্ডিয়া, অব দ্য ইন্ডিয়া!
গয়েশ্বর রায় সীমান্ত হত্যার ঘটনার উল্লেখ করে বলেন,আগে সীমান্তরক্ষীদের নাম ছিল বিডিআর, বাংলাদেশ রাইফেল। আর এখন হচ্ছে বর্ডার গার্ড, রাইফেল নেই। রাইফেল নেই তো প্রতিদিন তারা শখ করে শিকার করে আমার দেশের মানুষকে। আমাদের জোয়ানরা মারা যান, পতাকা বৈঠক করে লাশটা ফেরত নেন, লজ্জা লাগে। পূর্বাঞ্চলে কী হচ্ছে। সেদিকে নজর নেই।
রুহুল কবির রিজভী উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে বলেন,একটা ডামি নির্বাচন হচ্ছে। ফালতু নির্বাচন। বিএনপি যে এই নির্বাচন বর্জন করেছে, জনগণ তাতে সমর্থন দিয়েছে। এ জন্য দেশের জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই সরকার দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে না। তারা জুয়ারিদের দেশের টাকা পাচার করার সুযোগ করে দিচ্ছে। বিভিন্ন অনলাইন ক্যাসিনো বেটিংয়ের মাধ্যমে জুয়ারিরা দেশের টাকা বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। আজকে সরকার আদানির কাছথেকে বিদ্যুৎ কিনে ভারতকে স্বচ্ছল করছে।