কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁর মালিক সোহেল সিরাজকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজে আগুনে ৪৬ জন নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামী ছিলেন তিনি। ঘটনার পরই পালিয়ে যান সোহেল। গত মঙ্গলবার রাতে মালয়েশিয়া থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পরই ইমিগ্রেশন (অভিবাসন) পুলিশ তাকে আটক করে। পরে তাকে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ নিয়ে বেইলি রোডের ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় মোট ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
বুধবার কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁর মালিক সোহেল সিরাজকে সিআইডি আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। পরে শুনানি শেষে আদালত তার ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
সিআইডির এসআই নিজামউদ্দিন ফকির বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে মালয়েশিয়া থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পরই অভিবাসন পুলিশ তাকে আটক করে সিআইডির কাছে হস্তান্তর করে। বেইলি রোডের আগুনের ঘটনায় হওয়া মামলায় সোহেল সিরাজকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সিআইডি পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠায়। শুনানি শেষে তাহমিনা হকের আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২৯ ফেব্রæয়ারি রাতে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ নামের আটতলা ভবনে আগুন লাগে। ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় ছিল বিরিয়ানির দোকান কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁ। এ ছাড়া ভবনটির অন্যান্য তলায়ও ছিল অনেকগুলো খাবারের দোকান। সাপ্তাহিক ছুটির আগের দিন বৃহস্পতিবার রাতে ভবনটিতে ছড়িয়ে পড়া আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন নারী ও ৮ শিশু ছিল। তারা সবাই খাবার খেতে ভবনটির বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন। এ ঘটনায় অবহেলার কারণে মৃত্যুর অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। মামলায় ভবনটির নিচতলার চায়ের দোকান ‘চুমুক’ এর মালিক আনোয়ারুল হক (২৯), কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের মালিক সোহেল সিরাজ (৩৪) ও ভবনের ম্যানেজার মুন্সি হামিমুল আলম বিপুল (৪০) এবং অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়।
আগুন লাগার কারণ হিসেবে বিস্ফোরক অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিস জানায়, ভবনটির নিচ তলায় থাকা চায়ের দোকান চমুকে ইলেকট্রিক কেটলিতে শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়। এরপরই আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। ভবনটি আবাসিক ভবন হিসেবে নির্মিত হলেও পরবর্তীতে উল্লেখিত আসামীসহ ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য বাণিজ্যিক সনদ সংগ্রহ করেন। রেস্টুরেন্টের মালিকরা রান্না করার জন্য গ্যাস সিলিন্ডার বা চুলা ব্যবহারে ফায়ার সার্ভিস থেকে অনুমতি নেননি। রেস্টুরেন্টগুলোতে অগ্নি নির্বাপণের জন্য পর্যাপ্ত ফায়ার এক্সটিংগুইশারসহ অন্যান্য ফায়ার ফাইটিং যন্ত্রপাতি ছিল না। এমনকি ভবনটিতে ফায়ার এক্সিট সিঁড়িও নেই। মামলাটি এখন তদন্ত করছে সিআইডি।