ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নির্বাচনী এলাকায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে থেকে ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যরা স্বতন্ত্রভাবে দায়িত্ব পালন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতোপূর্বে আনসার সদস্যরা জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) অধীনে থেকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতেন। কিন্তু এবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে জারি করা পরিপত্রে আনসারসহ মোতায়েন করা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে (জেলা প্রশাসক) রাখা হয়।
বিষয়টি নিয়ে পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। ওই প্রতিনিধি দলে অতিরিক্ত আইজিপি আতিকুল ইসলাম, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি নূরুল ইসলাম ও নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল উপস্থিত ছিলেন। তারা ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-২০২৪-এর পরিপত্রের ৩-এর গ, ঘ, ঙ ধারাসহ কিছু ধারা সংশোধনের দাবি তুলেছেন।
জানতে চাইলে আনসারের একাধিক ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা জানান, অঙ্গীভূত আনসাররা জেলা পুলিশ সুপারদের অধীনে থেকে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ি কাজ করবেন। আর ব্যটালিয়ন আনসার সদস্যরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে থেকে স্বতন্ত্রভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
মাঠ পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, আনসার সদস্যরা আগে পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট করতেন। পুলিশ সুপার নির্বাচনী এলাকায় প্রয়োজন অনুসারে আনসার সদস্য মোতায়েন করেন। সাধারণ কেন্দ্রে ও গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব বন্টন করে থাকেন। এবার এসপিদের পরিবর্তে আনসার সদস্যদেরকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে রাখা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে আনা হয়েছে। কয়েক জেলায় পুলিশ সুপাররা আনসারদেরকে নির্বাচনী দায়িত্ব বন্টন থেকে বিরত রাখার কথাও জানা গেছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ‘বিষয়টি খুবই সেন্সেটিভ। এটা নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলা ঠিক নয়। পরিপত্রের অন্য জায়গায় যাই বলা হোক, কেন্দ্রের মূল নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশই পালন করবে। পরিপত্রেই বলা আছে, পুলিশ কমিশনার বা পুলিশ সুপার স্থানীয়ভাবে গুরুত্ব বিবেচনায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা রিটানিং অফিসারের সঙ্গে পরামর্শ করে কেন্দ্র পুলিশ ও আনসার সদস্য কম-বেশি করবেন।’ মাঠ পর্যায়ে পুলিশ ও আনসারের মধ্যে মাঠ কোন সমন্বয়হীনতা নেই বলে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের এই নেতা।
এবারের (ষষ্ঠ) উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পরিপত্রে বলা হয়, ‘নির্বাচনী এলাকায় মোতায়েন করা সকল আইন শৃঙ্খলা বাহিনী জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট রিপোর্ট করবে এবং পুলিশ সুপার ও রিটানিং অফিসারের সাথে পরামর্শ করে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় তাদেরকে নিয়োজিত করবেন।’
পরিপত্রে আরও বলা হয়, রিটানিং অফিসারের চাহিদা অনুযায়ি জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশক্রমে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মোবাইল, স্ট্রাইকিং টিম, বিজিবির প্লাটুন বিভাজন করা হবে। ব্যাটালিয়ন আনসার প্রতি উপজেলায় এক সেকশনে ১০ জন সদস্য মোতায়েন করতে হবে। উক্ত সদস্যরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, রিটানিং অফিসার, সহকারী রিটানিং অফিসারের কার্যালয়ের নিরাত্তার দায়িত্বে বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশনা মতো অন্য কোথাও দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশের সাথে স্ট্রাইকিং বা মোবাইল টিমে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রতি উপজেলায় ২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করতে হবে।