প্রায় ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি পিছিয়েছে। একইসঙ্গে আগামী ২ জুন অভিযোগ গঠনের উপর শুনানির জন্য দিন ধার্য করে দিয়েছে আদালত। আসামি পক্ষের সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেন এই দিন ধার্য করে দেন। এদিকে ১৪ আসামির জামিনের মেয়াদ ওইদিন পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছেন বিচারক।
গতকাল এই মামলায় ড. ইউনূসসহ ১৪ আসামি আদালতে হাজিরা দেন। হাজিরা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচারের অভিযোগগুলো সত্য কি না, নাকি সুদখোরের মতো কথাবার্তা, সেটা আপনাদের ওপর ছেড়ে দিলাম। আমি আদালত থেকে আদালতে যাচ্ছি। আমার কাছে তো কোনো উত্তর নেই।
প্রসঙ্গত অর্থ আত্মসাত ও পাঁচারের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় দুদক। ইতিমধ্যে চার্জশিট আমলে নিয়েছে আদালত। এখন চার্জ শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য ছিলো। কিন্তু আসামি পক্ষের কৌসুলিরা অভিযোগ গঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য আবেদন দাখিলে সময় প্রয়োজন বলে আদালতকে অবহিত করেন। এরপরই আদালত এক মাস সময় দেয়। আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন, অ্যাডভোকেট খাজা তানভীর আহমেদ এবং দুদকের পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানি করেন।
আদালত প্রাঙ্গণে ড. ইউনূস বলেন, দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলছি, আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাত ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। আমাকে বহুদিন থেকে আপনা চেনেন। এই অপরাধগুলো আমার গায়ে লাগানোর মতো অপরাধ কি না, সেটা আপনারা বিবেচনা করবেন। আগে যে রকম বিবেচনা করেছেন।
তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক আমি নই। সুদ যদি কেউ নিয়ে থাকে, গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকেরা নিয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে, আমি সুদখোর। বহুবার এ কথা বলা হয়েছে, আপনারা সেটি গ্রহণ করেননি। আমাকে যখন গ্রামীণ ব্যাংক থেকে বের করে দেওয়া হলো, তখন গ্রামীণ ব্যাংকের ৯৭ শতাংশ সদস্য ছিলেন এর মালিক। সুদ যদি গ্রহণ করে থাকেন, সেটি তাঁরা করেছেন। আমি কর্মচারী মাত্র। আমি গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক ছিলাম না। কাজেই আপনারা সেটি গ্রহণ করেননি।
ড. ইউনূস আরও বলেন, আমাকে বলা হয়েছে গরিবের রক্তচোষা। আমি এক কোটি গরিব মানুষকে ব্যাংকের মালিক বানিয়েছি। তাদের মালিকানা দিয়েছি। এটা তো সত্য। বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু বানচাল করেছি। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের টাকা বন্ধ করেছি। আপনারা সেটি গ্রহণ করেননি। আজ যে অভিযোগ, সেই একই ধরনের অভিযোগ। আপনাদের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দিলাম।