spot_img

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ স্কুলগুলোকে নির্দেশনা দেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়

প্রচন্ড তাপদাহের কারণে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ থাকলেও শিক্ষা মন্ত্রনালয় তাদের আওতাধীন সব স্কুল-কলেজ বন্ধে কোন নির্দেশনা দেয়নি। ফলে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা স্কুল চালু রাখবেন কিনা বা অভিভাবকরা তার সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন কিনা তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ তৈরি হয়েছে।
যদিও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশনা আগেই দিয়েছে। কিন্তু গতকাল রাত ৮ টা পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে কোনো আদেশ জারি করেনি।
তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যেহেতু হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রচারিত হয়েছে। এছাড়া এর বিরুদ্ধে আপিল হয়নি। এ কারণে এই আদেশ মানতে বাধ্য। তাই স্কুল বন্ধ রাখতে হবে।
গত সোমবার উচ্চ আদালত এক নির্দেশনায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারাদেশের অন্যসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছিলো। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রনালয় শুধুমাত্র মঙ্গলবার ২৭ জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখে। আর এ ব্যাপারে তারা আপীল করার কথা জানিয়েছিলো। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রলণালয় শেষ পর্যন্ত আপীল করেনি।
আজ বুধবার ও কাল বৃহস্পতিবার আদালত বন্ধ থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটির বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিলে যাওয়ার সুযোগ থাকছে না।
গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, আদালতের আদেশের কপি এখনো আমাদের হাতে আসেনি। এটা নিয়ে আমি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করেছি। পূর্ববর্তী নজির হচ্ছে যতক্ষণ পর্যন্ত একটি অন্তবর্তীকালীন আদেশ বহাল থাকে, নির্বাহী বিভাগ যদি সেটার বিষয়ে অবগত হয়, তারা সম্মান প্রদর্শনপূর্বক সেটাই মেনে চলে। অর্থাৎ আদালতের যে অন্তবর্তীকালীন আদেশ সেটা যদি বহাল থাকে, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আমরা সেটা মেনে চলতে বাধ্য।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং যেহেতু আমরা রায়ের কপি পাইনি তাই, এ বিষয়ে আমরা কোন মন্তব্য করবো না। এখানে নিরবতা হচ্ছে সম্মানের লক্ষণ।
মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ঢাকার একটা পরিবেশ ঢাকার বাইরে যে বিভাগীয় শহরগুলো আছে সেখানে এবং প্রান্তিক পর্যায়ে পরিবেশটা ভিন্ন। পাঠদান কার্যক্রমে যে অভিভাবকরা সংশ্লিষ্ট এবং সেখানে যারা শিক্ষক আছেন তাদের চ্যালেঞ্জগুলোও রাজধানীর মতো নয়। অনলাইনে ক্লাস রাজধানীতে যতটা করা সহজ, বাংলাদেশের সব জায়গায় সেটা সমান নয়। হাওরাঞ্চল, দ্বীপাঞ্চল এবং পার্বত্য অঞ্চলে শুষ্ক মৌসুমে পাঠদান কার্যক্রমটা হয়ে থাকে। সেগুলো যদি এখন বন্ধ থাকে সেগুলো তাদের জন্য যেমন ক্ষতিকর, তাদের শিখন ফল অর্জনের যে ঘাটতি, সেটি আরও বেড়ে যাবে।
মন্ত্রী জানান, এ অবস্থায় তাপমাত্রার বিষয়টি বিবেচনের নিয়ে সুনির্দিষ্ট জেলায় পাঠদান কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছিল। সে বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্তও দিয়েছি। আমরা দৈনিক ভিত্তিতে সেই সিদ্ধান্তটা দিচ্ছিলাম। সোমবার কয়েকটি জেলায় দেওয়া হয়েছিল, পরের দিন জেলার পরিসর বাড়ানো হয়।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমের মাধ্যমে শোনা যাচ্ছে যে, ও-লেভেল এ-লেভেল স্কুল খোলা থাকবে। ইংরেজি মাধ্যমে প্রভাবশালী ও ধনশালী ব্যক্তিরা তাদের সন্তানদের পড়াশোনা করতে পাঠান। তাদের স্কুলগুলো খোলা থাকবে আর প্রান্ত্রিক পর্যায়ে যাদের বাবা-মা মাঠে ঘাটে কাজ করেন, এই বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সমাজকে চালিয়ে রেখেছেন, তাদের সন্তানরা পাঠদান কার্যক্রম করতে পারবে না। এটা তো দৃশ্যত বৈষম্যমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। সেটাই হচ্ছে দুঃখজনক।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের এখন মোট কার্যদিবস আছে ১৮৫ দিন। সেখানে আমাদের মূল্যায়নের জন্য ২০ দিন রাখা হয়েছে। জাতীয় দিবসগুলোর জন্য পাঁচ দিন, অতিরিক্ত যে দিনগুলো আছে সেখানে আমরা রিঅ্যাডজাস্টমেন্ট করব। শিক্ষা ক্যালেন্ডারটা স্থির থাকা কঠিন।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,100SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ