spot_img

মাদক বিরোধী সচেতনতার প্রচারণা চালাতে গিয়ে অপহৃত

দেশের একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিত্তিক মাদকবিরোধী সংগঠন প্রতিভা সোসাইটি অ্যান্ড ফ্রীডম ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টি এ্যালকোহল। সরকারিভাবে অনুমোদিত সংগঠনটি এক যুগের বেশি সময় দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতামূলক কাজ করছে। তবে এই কাজ করতে গিয়ে মাদক ব্যবসায়ী চক্রের হামলা এবং হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার হোসেন শাহনেওয়াজ। একবার অপহরণের শিকার হওয়ার পর মুক্তিপণের বিনিময়ে ছাড়া পান তিনি। মাদক কারবারি চক্রের প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করেন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের পক্ষ থেকে কাগজে-কলমে নিরাপত্তার কথা বলা হলেও বাস্তবে কিছুই পাচ্ছেন না।
বিভিন্ন সময় মাদক কারবারিদের কাছ থেকে প্রাণনাশের হুমকির পেয়ে মিরপুরের কাফরুল থানায় বিভিন্ন সময়ে ৬ টি জিডি করেছেন আনোয়ার। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যদি তিনি হামলার শিকার হন তাহলে তাকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়া হবে। তার করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সদর দপ্তরের তদন্তেও এর সত্যতা উঠে এসেছে এবং নিরাপত্তার জন্য সংশ্লিষ্ট থানাকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তারপরও নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়ায় তিনি জীবননাশের শঙ্কায় ভুগছেন।
প্রতিভা সোসাইটি অ্যান্ড ফ্রীডম ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টি এ্যালকোহল দেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান; যা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অনুমোদিত। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের নিরাপত্তার জন্য শিক্ষা অধিদপ্তর, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও স্মারক ইস্যু করেছেন। এসব স্মারকে চেয়ারম্যানের নিরাপত্তার বিষয়টি জোরদার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়।
এদিকে করোনার সময়ে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সোসাইটি প্রায় এককোটি স্টিকার ও সত্তর লাখ লিফলেটের আঁঠা শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। পরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে আরও ৪০ লাখ মাদকবিরোধী লিফলেট ও স্টিকার ফেরত আসে। এতে প্রায় ১৫ কোটি টাকা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় প্রতিষ্ঠানটি।
পরে প্রতিষ্ঠানটি এ বিষয়ে আর্থিক সহায়তা পেতে ২০২১ সালে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আবেদন করে। কমিশনার বিষয়টির গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে বিভিন্ন জেলা প্রশাসকসহ অন্যান্য দায়িত্বশীলদের নিয়ে সভা করে প্রতিষ্ঠানটিকে প্রয়োজনীয় আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে শিক্ষা সচিব বরাবর চিঠি দেয়। কিন্তু এখনো প্রতিষ্ঠানটি কোনো আর্থিক সাহায্য পায়নি।
আনোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমানে দেশের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় মাদক চোরাকারবারি রয়েছে। মাদক সেবনকারীরা মাদক ব্যবসায়ীতে পরিণত হচ্ছে। আমার কাজে ঝুঁকির মাত্রা স্বাভাবিকভাবেই অনেক বেশি। আমি বিভিন্ন সময় মাদক চোরাকারবারিদের টার্গেটে পরিণত হয়েছি। আমাকে বিভিন্ন সময় ফোনে হুমকিও দেওয়া হয়। এ অবস্থায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, সোসাইটির কাজ করতে গিয়ে শারীরিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ছাপাখানাগুলো পাওনার জন্য চাপ দিচ্ছে। দেশব্যাপী সব বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকরা মাদকবিরোধী লিফলেট ও স্টিকার বিতরণের জন্য স্মারক ইস্যু করলেও আর্থিক কারণে আমরা যথাযথভাবে কার্যক্রম করতে পারছি না। প্রাণনাশের শঙ্কার পাশাপাশি আর্থিক কারণেও সংগঠনের কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়গুলো কাগজে-কলমেই রয়ে গেল। সেগুলোর বাস্তবায়নই আমার এখন একমাত্র চাওয়া।
এদিকে প্রতিভা এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, ফ্রীডম ইন্টারন্যাশনাল এন্টি এ্যালকোহলের চেয়ারম্যানের নিরাপত্তার বিষয়ে কাফরুল থানার ওসি ফারুকুল আলম বলেন, ‘বিষয়টি এই মুহূর্তে আমার নলেজে নেই। খোঁজ নিয়ে পরে জানাতে পারবো।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,100SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ