বান্দরবানে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ব্যাংক ডাকাতি ও অস্ত্র লুটের ঘটনায় যৌথ বাহিনীর সমন্বিত সাঁড়াশি অভিযানে নারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ব্যাংক ডাকাতি ও অস্ত্র লুটের ঘটনায় এবং কেএনএফ দমনে যুক্ত হয়েছে ৪টি সাঁজোয়া যান। (এপিসি)। সোমবার সকালে বান্দরবান পৌর এলাকায় টহল দিয়ে ৩টি সাঁজোয়া যান নিরাপত্তা বাহিনীর বহর নিয়ে একটি রুমা উপজেলায় , একটি থানচি উপজেলায় ও একটি রোয়াংড়ি উপজেলায় চলে যায়। জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন রয়েছে।রুমা রোয়াংছড়ি, থানচি উপজেলায়ও যৌথবাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, বান্দরবানের থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা মামলায় এক নারীসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত রবিবার থানচির টিএন্ডটি পাড়া হতে ব্যাংক ডাকাতিতে ব্যবহৃত গাড়ি চালক মোঃ কফিল উদ্দিন সাগরকে ও জেলা সদরের রেইচা এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযান চালিয়ে ডাকাতির কাজে জড়িত এক নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল সোমবার দুপুরে বান্দরবান পুলিশ সুপার কার্যালয়ের অফিস থেকে এ তথ্য জানানো হয়। গ্রেপ্তারকৃত অপর তিনজন হলেন রোয়াংছড়ি ইউনিয়নের রৌনিন পাড়ার জিংচুন নুং বমের ছেলে ভাননুন নুয়াম বম, থানচি ইউনিয়নের সিমতøাং পাড়ার লালমুন চম বমের মেয়ে জেমিনিউ বম ও ছেলে আমে লমচেউ বম। একই দিন থানচিতে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় সন্ত্রাসীদের গাড়িতে পরিবহনের দায়ে গাড়ি চালক কফিল উদ্দিন সাগর২৮কে গ্রেপ্তার করা হয়।সঙ্গে ব্যাংক ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত গাড়িটিও জব্দ করা হয়।
এদিকে সোমবার রুমা উপজেলার বম অধ্যুষিত ব্যাথেল পাড়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে ৭ টি দেশি বন্দুক,২০ রাউন্ড গুলি, কেএনএফের ২ জন সক্রিয় সদস্য,ল্যাপটপ, পোশাক ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে যৌথবাহিনী।
পুলিশ জানায়, গত ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচির সোনালী এবং কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি,ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ টাকা ও ১৪ টি অস্ত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ২০টির মতো মুঠোফোনও ছিনিয়ে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।ব্যাংক ম্যানেজার উদ্ধার হলেও লুট হওয়া অস্ত্র ও টাকা উদ্ধার করা যায়নি। সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফ এ সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এ ঘটনায় রুমা ও থানচি থানায় ৮টি মামলা করা হয়। ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনই জড়িত। কেএনএফ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার, অস্ত্র ও টাকা উদ্ধারের সাঁড়াশি যৌথ অভিযানে সেনাবাহিনী,র্যাব,বিজিবি,পুলিশ, আনসার সদস্যদের অংশগ্রহণে পাহাড়ে চিরুণী অভিযান চলছে। ব্যাংক ডাকাতি ও অস্ত্র লুটের ঘটনায় গত ৬এপ্রিল স্বরাস্ট্রমন্ত্রী এবং ৭ এপ্রিল সেনাবাহিনী প্রধান রুমা ও থানচি উপজেলার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ সমাজ,প্রশাসনিক কর্মকর্তা,ও সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন এবং সন্ত্রাসী ও সন্ত্রাসীদের আস্তানা নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত সমন্বিত যৌথ অভিযানের কথা পুনরাবৃত্তি করেন। ¯œরন করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রীর কঠোর অবস্থানের কথা।
এদিকে কেএনএফ সদস্যদের অস্ত্র সমর্পণ কওে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহবান জানিয়েছেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং শান্তি প্রতিষ্টা কমিটির আহবায়ক ক্যশৈহ্লা মার্মা ও সদস্য সচিব লালজারলম বম। লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়, এ পর্যন্ত কেএনএফের ৯৬৮টি পরিবারের মাঝে ১৩৪ মেট্রিক টন চাউল, নগদ অর্থ, শীতবস্ত্র, ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।কারাবন্দি দুজনকে জামিনে মুক্তিলাভে সহায়তা করা হয়েছে।অবশিষ্ট কারাবন্দী সদস্যদেও মুক্তির বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্থ বম জনগোষ্টীর সহায়তার জন্য খাদ্যশস্য এলাকায় জনপ্রতিনিধিদের কাছে পৌঁছানো হয়েছে।
রুমা থানচিতে এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।অনেকে আতঙ্কে ঘর থেকে বের হচ্ছে না।অভ্যন্তরীণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। রুমা ও থানচি বাজারের অনেক এলকায় আংশিক দোকান পাট বন্ধ রয়েছে। রুমা উপজেলায় বম জনগোষ্টীর অধিকাংশ যুবক এলকা ছেড়ে জেলা সদর কিংবা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।