অনেকটা হলিউডের মুভির কাহিনীর মত। হলিউডে ব্যাংক লুটের বড় বড় ঘটনা নিয়ে বানানো ছবি সারা বিশ্বে দর্শকনন্দিত। বান্দরবানের থানচিতে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর এরকম একটি সম্ভাব্য ব্যাংক লুটের কাহিনী সৃষ্টিতে বাধা দিয়েছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি। বুধবার দিনে দুপুরে থানচিতে সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে কেএনএফের সশস্ত্র সদস্যরা ভল্ট ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা চালায়। ওই মুহুর্তে বিজিবি ৩৮, বলিপাড়া ব্যাটালিয়নের থানচি বিওপি’র সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ভল্ট লুট ঠেকিয়ে দেয়। কেএনএফের সদস্যরা ভল্ট ভেঙ্গে ফেলতে না পেরে ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টারে হামলা চালায়। ক্যাশ কাউন্টারে নগদ যা পায় তাই লুট করে পড়িমরি ছুটতে থাকে বাইরে অপেক্ষমান চান্দের গাড়ির দিকে।
কি কারণে কেএনএফ ব্যাংক দুটির ভল্ট লুট করতে পারেনি জানতে চাইলে বিজিবি ৩৮, বলিপাড়া ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (সিও) লে. কর্নেল তৈমুর হাসান বলেন,
বেলা তখন খুব সম্ভব ১২ টা। আমি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে অফিস করছি। ওয়্যারলেস সেটে ম্যাসেজ শুনতে পাই যে থানচি বাজারের একটি ব্যাংকে সশস্ত্র যুবকরা ঢোকার চেষ্টা করছে। আমি তখন ওয়্যারলেস সেটে থানচি বিওপিতে ম্যাসেজ জানাই এবং দ্রুত ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কেএনএফের ২৫-৩০ জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল তিনটি চান্দের গাড়িতে করে শাহজাহান পাড়ার দিক থেকে এসে থানচি বাজারে প্রবেশ করে। তারা একটি চায়ের দোকানে চা পান করে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে ফাঁকা গুলি করে সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে ঢুকে পড়ে। তাদের টার্গেট ভল্ট। কিন্তু ভল্টের তালা ভাঙ্গার চেষ্টার সময় তাদের কাছে খবর আসে যে বিজিবি সদস্যরা ব্যাংকের দিকে আসছে। এই খবর পেয়ে কেএনএফের সদস্যরা ভল্ট ভাঙ্গার কাজ বাদ দিয়ে ক্যাশ কাউন্টারে হামলা চালায়।
এদের মধ্যে সোনালী ব্যাংক থেকে ১৫ লাখ টাকা এবং কৃষি ব্যাংক থেকে ৭ লাখ টাকা লুট করে । তারা ব্যাংকের ক্যাশে থাকা টাকা ও ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মোবাইল ফোনগুলো নিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যেই আবারও ফাঁকা গুলি করে বাজার থেকে বের হয়ে যায়। প্রথমে সন্ত্রাসীরা ব্যাংকের নিরাপত্তারক্ষীর আগ্নেয়াস্ত্র কেড়ে নেয়। যাওয়ার সময় আবার সেগুলো তাদের হাতে দিয়ে দেয়। তবে সন্ত্রাসীরা কাউকে মারধর করেনি।
বিজিবি বলিপাড়া ব্যাটালিয়নের সিও লে. কর্নেল তৈমুর হাসান বলেন, কেএনএফরা পালিয়ে যাবাবর পর বিজিবির একটি টিম ওই দুই ব্যাংকের ভল্টে টাকা উদ্ধার করে বিজিবি নিরাপত্তা দিয়ে বান্দরবান শহরে বিজিবির স্কর্ট দিয়ে পৌঁছে দেয়া হয়।
থানচি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মামুন বলেন, সন্ত্রাসীরা সোনালী ব্যাংক থেকে ১৫ লাখ টাকা এবং কৃষি ব্যাংক থেকে ৭ লাখ টাকা অস্ত্রের মুখে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় ব্যাংক কর্মকর্তাদের ব্যবহৃত ১০টি মোবাইল ফোন দিয়ে যায়।