পবিত্র ঈদুল ফিতরসহ সবসময় সকল সড়ক ব্যবহার করে যাতে নিরাপদে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছতে পারে সেলক্ষ্যে সরকারের প্রতি সাত সুপারিশ উত্থাপন করেছে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন। বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টায় রাজধানীর শ্যামলীস্থ ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টর আয়োজিত সড়ক নিরাপত্তা জোরদারকণে গণমাধ্যমের ভ‚মিকা শীর্ষক সভায় এই সুপারিশ উত্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির রোড সেফটি প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী শারমিন রহমান।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ। উক্ত সভায় ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন রোড সেইফটি প্রকল্পের অ্যাডভোকেসি অফিসার (পলিসি) জেরিন আফরোজ, অ্যাডভোকেসি অফিসার (কমিউনিকেশন) তরিকুল ইসলামসহ সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ি, সড়ক দুর্ঘটনায় (রোডক্র্যাশ) বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩১ হাজার ৫ শত ৭৮ জনের মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ঈদ বা যে কোনো উৎসবে সড়ক দুর্ঘটনার হার আরো বেড়ে যায়। সেই সাথে বাড়ে মৃত্যু ও আহতের সংখ্যাও। এসকল দিক বিবেচনা নিয়ে উত্থাপিত সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি দাবি জানান।
সুপারিশসমূহ হলো : ১. সড়কে দুর্ঘটনার একটি অন্যতম কারণ হলো যানবাহনের অনিয়ন্ত্রিত গতি। সড়ক ও পরিবহনের ধরন অনুযায়ী গতি নির্ধারণ ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত গাইডলাইন অতিসত্তর প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করতে হবে, ২. মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী উভয়েরই মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার নিশ্চিত করতে এ সংক্রান্ত এনফোর্সমেন্ট গাইডলাইন প্রণয়ন করতে হবে, ৩. যানবাহনে চালকসহ সকল যাত্রীর সিটবেল্ট ব্যবহার সংক্রান্ত গাইডলাইন প্রণয়ন করতে হবে। পাশাপাশি মোটরযানে (বিশেষ করে কার/জীপ/মাইক্রোবাসে) শিশু সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় এনে শিশুদের জন্য উপযুক্ত শিশু সুরক্ষিত আসন ব্যবস্থা প্রচলন সংক্রান্ত বিধি-বিধান জারি করতে হবে, ৪. মদ্যপ অবস্থায় বা নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করে মোটরযান পরিচালনা না করা সংক্রান্ত বিধি-বিধান বাস্তবায়ন করতে হবে। ৫. সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য নিয়ে যেহেতু বিভ্রান্তি রয়েছে সেহেতু সড়ক দুর্ঘটনার সঠিক তথ্য সংগ্রহ ও প্রদানে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনাগুলো বিবেচনায় এনে কেন্দ্রিয়ভাবে তথ্য সংরক্ষণ ও সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করতে হবে, ৬. যেহেতু বর্তমান সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ তে সড়ক ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা বিষয়টি অনুপস্থিত, সেহেতু বিশ্বব্যাপী সমাদৃত সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের আদলে সমন্বিত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ৭. সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস এবং এ সংক্রান্ত টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জনে সড়ক নিরাপত্তা আইন বাস্তবায়নকারী সংস্থাসমূহের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় সাধনের জন্য একটি জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ গঠন করতে হবে।