১৩ বছর আগে ভারতের এক রপ্তানিকারকের বিল পরিশোধ না করে ফেঁসে গেছে সোনালী ব্যাংক। ভারতের একটি আদালত এখন বাংলাদেশের রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকটিকে ২০১১ সালের ১২ মার্চ থেকে বর্তমান তারিখ পর্যন্ত মূল বিল ৬০ হাজার ২৩৪ ডলার এবং ওই বিলের সুদ পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ৮ মার্চ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায় এ মামলার রায় দিয়েছেন। ওই রায়ে মূল পাওনা পরিশোধের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি সোনালী ব্যাংকের কলকাতা শাখার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে (সিইও) মোহাম্মদ আসলাম হোসেনকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে না, তার কারণ দর্শাতেও বলা হয়েছে বলে জানা গেছে সোনালী ব্যাংক সূত্রে।
সূত্রমতে, ২০১০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ফেয়ার ওয়াশিং লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি সোনালী ব্যাংকের রমনা কর্পোরেট শাখার মাধ্যমে ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদের নন্দন ডেনিম লিমিটেড থেকে কাপড় আমদানির জন্য ব্যাক-টু-ব্যাক ঋণপত্র (এলসি) খোলে।
ওই এলসির মূল্য ছিল ৭১ হাজার ৭৬৪ ডলার। এর মধ্যে ৬০ হাজার ২৩৪ ডলারের পণ্য পাঠায় রপ্তানিকারক। ওই বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশের বেনাপোল বন্দরে পণ্য পৌঁছায়। যদিও ওই নভেম্বরেই এলসি বাতিল করে আমদানিকারক। এলসি বাতিল হলেও পণ্য পাঠানোর ফলে তার বিল কালেকশনের জন্য ডকুমেন্ট পাঠায় ভারতের রপ্তানিকারকের ইউসিও ব্যাংক।
সোনালী ব্যাংকের রমনা কর্পোরেট শাখা ইউসিও ব্যাংককে নভেম্বরের ১৫ তারিখে জানিয়ে দেয় যে এলসি বাতিল হয়েছে। সঙ্গে এ-ও জানায়, বিল কালেকশনের জন্য যে ডকুমেন্ট পাঠানো হয়েছে সেখানে এলসি রেফারেন্স নেই। কিন্তু রপ্তানিকারকের দাবি, তার পণ্য চলে গেছে। ফলে পাওনা দিতে হবে।
এদিকে রমনা শাখা এলসির মূল্য পরিশোধ না করে ওই এলসির রপ্তানি আয়ের পুরোটাই ফেয়ার ওয়াশিং লিমিটেডের হিসাবে জমা করে। ফলে ভারতের রপ্তানিকারক নন্দন ডেনিমের পাওনা অপরিশোধিত থেকে যায়।
এরপর রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারতের আহমেদাবাদের আদালতে ২০১১ সালে মামলা করে। ২০১৮ সালে ওই মামলার রায়েও সোনালী ব্যাংককে পাওনা পরিশোধ করার নির্দেশ দেন আহমেদাবাদের আদালত। কিন্তু সোনালী ব্যাংক পাওনা পরিশোধ করেনি।
২০২১ সালে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান নন্দন ডেনিম। তখন মামলায় সোনালী ব্যাংকের রমনা কর্পোরেট শাখার পাশাপাশি কলকাতা শাখাকেও বিবাদী করা হয়।
সাধারণত পণ্য জাহাজীকরণের পর তার ডকুমেন্টপ্রাপ্তি সাপেক্ষে সেটি ইন অর্ডার থাকলে ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির ক্ষেত্রে বিলের অ্যাকসেপ্টেন্স দেওয়া হয়। এই অ্যাকসেপ্টেন্স দেওয়া হলে তার বিল ব্যাংক পরিশোধ করতে বাধ্য থাকে।