spot_img

সায় দেয়নি মন্ত্রিসভা, বাড়ছে না ঈদের ছুটি, বিধবা ভাতা পাওয়ার শর্ত শিথিল হচ্ছে

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) ছুটির যে সুপারিশ করা হয়েছিল তা নাকচ করে দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সুপারিশ নাকচ করে দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, ‘ক্যালেন্ডারে যেভাবে ছুটি রয়েছে, সেটাই থাকবে। ৮ ও ৯ এপ্রিল অফিস খোলা থাকবে। ওখানে (মন্ত্রিসভার বৈঠক) আলোচনা হয়েছিল। বিস্তারিত আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ তার মানে আগের ঘোষণা অনুযায়ী ঈদের ছুটি তিন দিনই থাকছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, তবে ঈদে ঐচ্ছিক ছুটির একটা ব্যবস্থা আছে, নিয়মানুযায়ী কেউ চাইলে সেই ছুটি আবেদন করে নিতে পারবেন। এটার (ঐচ্ছিক ছুটি) জন্য আলাদা নির্দেশ দেওয়ার দরকার নেই। এটা আমাদের ছুটি বিধিতেই আছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রমজান মাসের আগের দুটি হিজরি মাস ২৯ দিনের ছিল। সাধারণত পরপর তিন মাস ২৯ দিনের হয় না। এটা হলো সাধারণ হিসাব। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এবার রমজান ৩০ দিন হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এর ফলে ঈদুল ফিতর হতে পারে ১১ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার)। ১১ এপ্রিলকে ঈদুল ফিতরের দিন ঠিক করে ছুটির তালিকা করেছে সরকার।
বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত ভাতা পাওয়ার বিদ্যমান শর্ত কিছুটা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ ধরনের নারীদের মধ্যে যাঁদের বছরে আয় ১৫ হাজার টাকার নিচে, তাঁরা এই ভাতার সুযোগ পাবেন। এত দিন ১২ হাজার টাকার নিচে হলে এই ভাতা পাওয়া যেত। গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত ভাতা কর্মস‚চি বাস্তবায়ন নীতিমালা ২০২৪’-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তাতে ওই শর্ত শিথিল করা হয়েছে। তবে ভাতার পরিমাণ এখনকার মতোই ( মাসে ৫৫০টাকা) টাকাই থাকছে। বর্তমানে সারা দেশে ২৫ লাখ ৭৫ হাজার নারীকে মাসে ৫৫০ টাকা করে দেয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এখন এই ভাতার টাকা মোবাইল আর্থিক সেবার মাধ্যমে জি টু পি (সরকার থেকে সরাসরি ব্যক্তি) পদ্ধতিতে দেয়ার বিষয়টি বাধ্যতাম‚লক করা হয়েছে। আর অনলাইনে আবেদন ও বাছাইয়ের বিষয়টিও প্রাতিষ্ঠানিক করা হয়েছে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘আমদানি ও রপ্তানি আইন-২০০৪’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটি ম‚লত ইমপোর্ট ও এক্সপোর্ট (কন্ট্রোল) অ্যাক্ট-১৯৫০ এর আলোকে করা হয়েছে। ওই অ্যাক্টে কেবল পণ্যের কথা ছিল। প্রস্তাবিত আইনে তার সঙ্গে সেবাও যুক্ত করা হচ্ছে। এছাড়া আরো তিনটি আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এগুলো গত বছরই মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়েছিল। কিন্তু জাতীয় সংসদে বিল পাস না হওয়ায় নিয়ম রক্ষার জন্য আবারও মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিতে হচ্ছে। প্রস্তাবিত আইন তিনটি হলো পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা আইন-২০২৪, বিদেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা (স্থাবর সম্পত্তি অর্জন নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০২৪ এবং বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০২৪।
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারি ছুটি (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে) ১০ থেকে ১২ এপ্রিল। রবিবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ৯ এপ্রিল এক দিন ছুটি বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছিল। এদিকে পবিত্র শবে কদরের পর দিন ৭ এপ্রিল সরকারি ছুটি। এর আগে ৫ ও ৬ এপ্রিল দুই দিন শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। ১৩ এপ্রিল শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। তার পরদিন রবিবার বাংলা নববর্ষের ছুটি। এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের জানান, ৯ এপ্রিল সরকারি ছুটি থাকছে না। আমরা আইনশৃঙ্খলা কমিটির পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব করেছিলাম তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন করা হয়নি। তিনি জানান, আগামী ৯ এপ্রিল ছুটি দেওয়া হলে ছুটি দীর্ঘ হয়ে যাবে। এমনিতেই এ বছর ঈদে লম্বা ছুটি পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে আরও ছুটি দিলে সরকারি কাজকর্মে স্থবিরতা নামতে পারে। তবে যারা দ‚রে ঈদ করতে যাবেন তারা তো চাইলে ছুটি নিতে পারেন। তাদের সেই অধিকার আছে।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,100SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ