মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা এমএফএস ব্যবহার করে ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ৫ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বুধবার রাতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পৃথক অভিযান চালিয়ে ওই ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিআইডি প্রধান ও অতিরিক্ত আইজি মোহাম্মদ আলী মিয়া। সিআইডির অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ৫ জন হলেন, নাসিম আহেমেদ (৬২), ফজলে রাব্বি সুমন (৩২), কামরুজ্জামান (৩৩), জহির উদ্দিন (৩৭) ও খায়রুল ইসলাম পিয়াস (৩৪)। তাদের কাছ থেকে ৬টি মোবাইল, ১৮ টি সিম কার্ড, একটি ল্যাপটপ, ৬টি মডেম ও নগদ ২৮ লাখ ৫১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ‘জেট রোবটিক অ্যাপস’-এর মাধ্যমে অভিনব কৌশলে ৪০০ কোটি টাকা পাচার করেছে। তারা চট্টগ্রামের তাসমিয়া এসোসিয়েট নামে একটি বিকাশ ডিস্ট্রিবিউশন হাউজের কাছ থেকে এজেন্ট সিম সংগ্রহ করে। সিমগুলো মডেমের মাধ্যমে ল্যাপটপে ও কম্পিউটারে সংযুক্ত করে। জেট রোবটিক অ্যাপসের মাধ্যমে সংযুক্ত সিমের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় অ্যাপস নিয়ন্ত্রনকারী ব্যক্তিদের হাতে। তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই অফিস থেকে ডিজিটাল হুন্ডির কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ করে।
মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, এই ডিজিটাল হুন্ডি চক্রটির মূল হোতা শহিদুল ইসলাম মামুন। তিনি ২০২০ সাল থেকে দুবাই অবস্থান করছেন। সেখানে মামুনসহ ৫ জন জেট রোবটিক অ্যাপসের নিয়ন্ত্রক। তারা মালয়েশিয়ান একজন সফটওয়্যার ডেভেলপারের মাধ্যমে তৈরি করা এ্যাপসটিকে কাস্টমাইজ করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখেন। এজেন্ট সিমগুলো বাংলাদেশে থাকলেও মুলত: সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে দুবাই থেকে। দুবাই থেকে তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন নম্বরে নগদ বিকাশসহ বিভিন্ন এমএফএস সার্ভিসে ক্যাশ-ইন এর মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারে।
এই হুন্ডির কাজে তারা বিশ্বস্ত এজেন্টের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে। সংগ্রহকৃত অর্থ কোন নম্বরে বা কোন ব্যাংক হিসেবে পাঠাতে হবে সেটা নিশ্চিত হয়। তখন বাংলাদেশ থেকে সংগ্রহকরা এজেন্ট সিম থেকে এ্যাপস ব্যবহার করে প্রবাসীদের আতœীয়দের নম্বরে টাকা পাঠিয়ে দেয় এই চক্র। এই চক্র চট্টগ্রামের চাদগাঁও অবস্থিত তাসমিয়া এসোসিয়েটস থেকে ১৫০ টি এজেন্ট সিম সংগ্রহ করে এর ব্যবহার করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থকে মার্চ মাস পর্যন্ত মাত্র তিন মাসে চক্রটি প্রায় ৪০০ কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।