ট্রান্সকম গ্রæপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত লতিফুর রহমানের ছোট মেয়ে শাযরেহ হক বড় বোন সিমিন রহমানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, সিমিন রহমানসহ বাকি আসামিরা তার বড় ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে বিষ প্রয়োগ/শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন। আরশাদ ওয়ালিউর রহমান গত বছরের ১৬ জুন রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান। শুক্রবার রাজধানীর গুলশান থানায় তিনি মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বাকি আসামিরা হলেন ট্রান্সকম গ্রæপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমানের ছেলে যারাইফ আয়াত হোসেন, এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ম্যানেজার ডা. মুরাদ, এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ডাইরেক্টর মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস ডা. মো. মুজাহিদুল ইসলাম, ট্রান্সকম গ্রæপের কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স (আইন) মো. ফখরুজ্জামান ভুঁইয়া, গ্রæপের পরিচালক (করপোরেট ফাইন্যান্স) কামরুল হাসান, কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন, গ্রæপের কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স সেলিনা সুলতানা, ম্যানেজার কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স কেএইচ মো. শাহাদত হোসেন, গ্রæপটির কর্মচারী রফিক ও মিরাজুল।
মামলার এজাহারে শাযরেহ হক অভিযোগ করেন, মুসলিম শরিয়া আইন অনুযায়ি তিনিসহ তার মৃত বড় ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমান (৫৭) এবং মামলার এক নম্বর আসামি সিমিন রহমান তার পিতার সব স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তির ওয়ারিশ। লতিফুর রহমানের স্থাবর সম্পত্তিসহ তার প্রতিষ্ঠা করা ট্রান্সকম গ্রæপের শেয়ার এবং পজিশন নিজেদের অনুক‚লে হস্তগত করাসহ তাকে (শাযরেহ) এবং তার বড় ভাইকে (আরশাদ) সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জাল জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন কাগজপত্র তৈরি করে সম্পত্তি আত্মসাৎ করেন সিমিন রহমান ও তার ছেলে যারাইফ আয়াত হোসেন। তাদের জালিয়াতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য গত বছরের ৮ জুন আরশাদ ওয়ালিউর রহমান পাওয়ার অব অ্যাটর্নি প্রদান করেন। এতে সিমিন রহমান আরশাদ ওয়ালিউর রহমানের ওপর ক্ষিপ্ত হন। তখন তিনি জীবনের নিরাপত্তার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এর ৮ দিন পর গত ১৬ জুন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন আরশাদ। আনুমানিক বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলশান-২ এর নিজের বাসার শয়ন কক্ষে মৃত ও চিৎ অবস্থায় দেখা যায় তাকে। যদিও তার শরীরে কোনো জটিলতা বা রোগ ছিল না।
মামলার এজাহারে শাযরেহ হক আরও বলেন, ঘটনাস্থলে সব আসামিকে তিনি দেখতে পেয়েছেন। কিন্তু ভাইয়ের মারা যাওয়ার কথা বা অসুস্থতার কথা তারা কেউই জানাননি। পরে দ্রæত আমার ভাইকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে মৃত্যুর সনদপত্র নেয়ার জন্য তাড়াহুড়া করেন অভিযুক্তরা। পরে সেদিন বিকালেই দাফনের কাজ শেষ হয়।
শাযরেহ হক মামলায় উল্লেখ করেছেন, হাসপাতালে চিকিৎসকেরা সিমিন রহমানের উদ্দ্যেশে বলেছেন, উনি অনেক আগেই মারা গেছেন। কেন তাকে এত পরে হাসপাতালে আনা হলো? তখন পারিবারিক চিকিৎসক ডা. মুরাদ হাসপাতাল প্রশাসনকে বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ রিপোর্ট করার প্রয়োজন নেই।
শাযরেহ হক আরও উল্লেখ করেন, তিনি মনে করেন ১১ জন আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিগণ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে তাদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির ওয়ারিশ থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে তার বড় ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে বিষ প্রয়োগ বা শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে, যা আসামিদের আচরণে প্রকাশ পেয়েছে।
গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ শাহিনুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শুক্রবার মামলাটি দায়ের হয়েছে। মামলাটি আমরা তদন্ত করছি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।