আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, রাজনৈতিক কোন ইস্যু না পেয়ে বিএনপি ভারত বিরোধীতা শুরু করেছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ইফতার ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দুই হাজার মানুষকে ইফতার ও ঈদ সামগ্রী প্রদান করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পাকিস্তান আমল থেকে যে অপপ্রচার শুনেছি, কোনো রাজনৈতিক ইস্যু যখন থাকে না, তখন একটাই ইস্যু আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নিয়ে আসে। আজ বিএনপি আবার পাকিস্তানি কায়দায় (এই অপপ্রচার চালাচ্ছে)…। আগে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আনতো আর এখন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনে। সেটা হচ্ছে ভারত বিরোধীতার ইস্যু।’ তিনি বলেন, বিএনপি ইফতার পার্টি করে, আর আওয়ামী লীগ ইফতার সামগ্রী বিতরণ করে। তারা ইফতার খাওয়ার পার্টি করে আর আমরা ইফতার দেওয়ার পার্টি করি। এটাই বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে পার্থক্য। আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের মধ্যে ইফতার বিতরণে যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটা সারা ঢাকা শহরে ছড়িয়ে দিতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ক্ষমতার দল, নিজেদের পকেট উন্নয়নের দল। জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের দল হচ্ছে আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা। তারা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় নেই তো, লুটে পুটে হাওয়া ভবন করার সুযোগ নেই। হাওয়া ভবন ছাড়া বিএনপি টিকবে না। কারণ এই দল ক্ষমতা কেন্দ্রিক দল, মানুষের দল না। জনগণের দল আওয়ামী লীগ, ক্ষমতার দল বিএনপি। এটাই দুই দলের পার্থক্য। তিনি বলেন, বিএনপি অবাক করা দল। দলটির এক নেতা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারত আমাদের সহযোগিতা করেছে। আবার আরেক নেতা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেন। মঈন খানের এক কথা, রিজভীর আরেক কথা, আর সিঙ্গাপুর থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন আরেক কথা। নেতায় নেতায় কথায় মিল নেই।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইফতার পার্টি না করে ইফতার ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ করতে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার যে নির্দেশ তা পুরো ঢাকা শহরসহ সারা দেশে অব্যাহত রাখতে হবে।‘
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনেক ষড়যন্ত্র ছিল জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভারতসহ বন্ধু দেশ যারা আছে, তারা নির্বাচন বানচালে যে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত চলছিল-তা প্রতিহতে পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল।’ সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপির সব নেতাই একে একে জেল থেকে বেরিয়ে গেছে। এখন তারা বিদেশ গিয়ে দেশের বিরুদ্ধে সবক দিচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ ৪১ ভাগেরও বেশি ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে জয়ী করেছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, যেটা অনেক উন্নত দেশও পারে না। তারপরও বলবে ইন্ডিয়া নিয়ে এসেছে। ইন্ডিয়া কোথায়? আমাদের দেশের মানুষ ভোট দিয়েছে। তারা আমাদের ভোট দেয়নি, তারা আমাদের ভোট বানচাল প্রতিহত করার জন্য আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। দ্রব্যম‚ল্য বেড়ে যাওয়া নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন আছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইদানিং বেশ কিছু পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। পেঁয়াজের দাম কোথায় গিয়েছিল, এখন সেটা ৩০, ৩৫ বা ৪০ টাকায় নেমে গেছে। আমার মনে হয়, জিনিসপত্রের দাম আরও কমবে। সাধারণ মানুষের সহনীয় পর্যায়ে আসবে।’
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন মিয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ।