ভর্তি বাতিল হওয়া ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৬৯ শিশু মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে এমন দাবি করেছেন ছাত্রীদের অভিভাবকেরা। তারা বলছেন, স্কুলে যেতে না পেরে অনেকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। কেউ কেউ মানসিক যন্ত্রণালয় ভুগছে। কেউ আবার স্কুল ড্রেস পরে সারাক্ষণ বসে থাকছে। কান্নাকাটি করছে। পিতা মাতা হিসাবে এটা আমরা সহ্য করতে পারছি না। এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের মানসিক দিক বিবেচনা করে ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন অভিভাবকেরা। সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, আড়াই মাস স্কুলে ক্লাস করার পর হঠাৎ ভর্তি বাতিল ও স্কুলে যাওয়া বন্ধ হওয়ায় শিশুরা এখন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে। কোন অপরাধে তাদের এখন ভিকারুননিসা স্কুল ছেড়ে যেতে হবে?
গত ২৮ ফেব্রæয়ারি হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে ১৬৯ জনের ভর্তি বাতিল করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা অনুসরণ না করে ১ জানুয়ারি ২০১৭ সালের পূর্বে জন্মগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানো হয়- এমন অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের রিট করেন দুজন অভিভাবক। এরপর তাদের ভর্তি বাতিল করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
অভিভাবক রওশন আরা আফরোজ বলেন, তিন মাস পর হঠাৎ করে ভর্তি বাতিল করায় আমরা মেয়েদের কোথায় ভর্তি করাবে া? ঈদের পর অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা। এছাড়া বাচ্চাদের ভর্তি বাতিল হওয়ার পর স্কুলে যেতে পারছে না। তারা এক ধরনের ট্রমাটাইজ হয়ে গেছে। অনেক বাচ্চা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বন্ধুদের সঙ্গে স্কুলে যেতে না পেরে অনেক পড়ালেখা করতে চাচ্ছে না।
অভিভাবক কায়সার হোসাইন বলেন, বয়সসীমার যে কথা এখন বলা হচ্ছে, আমরা সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অনলাইন আবেদন করে ভর্তি করিয়েছি। মাউশির লটারির ফলাফলেও তাদের নাম ছিল। সেই তালিকা থেকেই ভিকারুননিসা স্কুল বাচ্চাদের ভর্তি করানো হয়েছে। তিনমাস পর কেন ভর্তি বাতিল করা হলো?
তিনি জানান, এ শিশুরা ভিকারুননিসা ছাড়া রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার ও সাউথ পয়েন্ট স্কুলসহ বিভিন্ন স্কুলের ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল। তখন এ বয়সের বিষয়টি বলা হলে বাচ্চাদের অন্য স্কুলে ভর্তি করাতাম।
অভিভাবক মমতাজুর রায়হান বলেন, সব জায়গা থেকে বলা হচ্ছে এ বাচ্চাদের নাকি প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে, টাকার বিনিময়ে ভর্তি করানো হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সংবাদ সম্মেলনে সৌমিত্র দে তপু, রওশন আরা আফরোজ, রাহাত আহমেদসহ অর্ধশতাধিক অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন।