spot_img

গাজীপুরে গ্যাস লিকেজ থেকে আগুন আরো দুই জনের মৃত্যু

গাজীপুর কালিয়াকৈরে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে একজন শিশুসহ দুই জন মারা গেছেন। এ নিয়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩। গতকাল শনিবার দুপুরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দগ্ধ মনসুর আলী আকন (৩২) মারা যান। গতকাল সন্ধ্যায় তাইবা (৫) নামে দগ্ধ শিশু আইসিউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এর আগে শুক্রবার দগ্ধদের মধ্যে
মো. সোলেমান মোল্লার (৪৫) মারা যান।
মনসুর ও তাইবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বার্ন ইনস্টিটিউটের সহকারি পরিচালক ডা. হোসাইন ইমাম ইমু। তিনি বলেন, মনসুর আলীর শরীর প্রায় শতভাগ দগ্ধ হয়েছিল। তিনি আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। শনিবার দুপুরে আমরা তাকে মৃত ঘোষণা করি। ৫ বছরের শিশু তাইবার শরীরের ৮০ ভাগ দগ্ধ হয়েছিল। তাকেও আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। সন্ধ্যায় আমরা তাকে মৃত ঘোষণা করি।
মৃত মনসুরের বড় ভাই আবু জাফর জানান, তাদের বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার সালদাহ উত্তরপাড়া গ্রামে। মনসুর রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ঘটনার সময় তিনি কাজ শেষ করে বাসায় ফিরছিলেন। সিলিন্ডারের গ্যাসের আগুনে তিনি দগ্ধ হন। তার স্ত্রী দিনা আক্তার ও দুই মেয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। বার্ণ ইন্সটিটিউট থেকে পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
এদিকে, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন যারা রয়েছে তারা হল, দগ্ধরা হলেন নাদিম (২২), নীরব (১০), সুফিয়া (৯), মিরাজ(১৩), সোলায়মান (৯), লালন (২৩), নাঈম (৮), শিল্পী (৪০), ইয়াসিন আরাফাত (২১), সুমন (২৬), মুহিদুল (২৭), মান্নাত (১৮), রাব্বি(১৩), নার্গিস(২২) সাদিয়া খাতুন (১৮), জহিরুল (৩২), রতœা বেগম (৪০), নূরনবী (৩), রহিমা (৩), কবীর (৩০), কুদ্দুস (৪৫), তৌহিদ (৭), মশিউর (২২), লাদেন (২২), কমলা খাতুন (৬৫), নিলয় (৩), বাশার (৪৫), ফেরদৌস (১৯), আজিজুল (২৪), সুমি (১৯) ও মোতালেব(৪০)। এদের মধ্যে ২০ জনই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
ওই আগুনে দগ্ধ হয়ে স্থানীয় একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক আরিফুল ইসলাম (৩৫) বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি। আরিফুলের স্ত্রী সুমি আক্তার বলেন, তিনিও গার্মেন্টস কর্মী। এখন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন। তার সামনেই তার স্বামী দগ্ধ হয়। ওই সময় সন্তান নিয়ে ঘরের ভেতর থাকায় তারা রক্ষা পান। তাদের গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর বাঘায়। আরিফুলের মুখমন্ডলসহ শরীরের ৭০ ভাগ পুড়ে গেছে।
এই আগুনে দগ্ধ গার্মেন্টকর্মী মহিদুল (২৭) ও তার স্ত্রী নার্গিস আক্তার (২২)। বার্ণ ইনস্টিটিউটে মহিদুলের ফুফা সিদ্দিক হোসেন বলেন, চিকিৎসকরা বলেছেন, স্বামী-স্ত্রী দুজনের অবস্থাই সঙ্কটাপন্ন। তাদের মধ্যে মহিদুলের ৯৫ ভাগ ও তার স্ত্রীর ৯০ ভাগ পুড়ে গেছে। এই দম্পতির তিন বছর বয়সি ছেলে থাকে গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের শাহজাতপুরে। মা বাবার কিছু হলে ছোট শিশুটির কি হবে তা নিয়ে শঙ্কিত স্বজনরা।
দগ্ধ ইয়াসিন আরাফাতের (২১) ভাই আব্দুল কাদির বলেন, আগুনে ভাইয়ের শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। চিকিৎসকরা বলছেন, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। মাত্র ১৮ দিন আগে তার একটা ছেলে সন্তান হয়েছে। আমার ভাই বাসায় ইফতার করতে যাচ্ছিল, সে তো ভাবেনি যে তার এত বড় বিপদে পড়তে হবে তাকে।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,100SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ