আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খুবই সক্রিয়। জিম্মি ২৬ জনের ইন্সুরেন্সও আছে। দুর্ভিক্ষ পীড়িত সোমালিয়ায় আইন-শৃঙ্খলার নাজুক পরিস্থিতি। এখানে মুক্তিপণ আদায় ম‚ল লক্ষ্য। আমাদের পক্ষ থেকে যোগাযোগের কোনো ঘাটতি নেই।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ যুব মহিলা লীগ এবং মহিলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, বাজার সিন্ডিকেট ও মজুদদারির সাথে কারা জড়িত এবং তাদের সাথে বিএনপির কোনো যোগসাজস আছে কিনা- সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এখন রমজান মাসে সরকারকে বিব্রত করার জন্য সিন্ডিকেট থাকতে পারে। খতিয়ে দেখতে হবে যে এ ধরনের অপকর্মের সাথে বিএনপির সম্পৃক্ততা আছে কিনা। তারাই এসব সিন্ডিকেট করে সরকারকে বিব্রত ও নির্বাচিত সরকারের অগ্রযাত্রাকে বাঁধাগ্রস্থ করার অপচেষ্টা চালাতে পারে।’
বাজারে দ্রব্যম‚ল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, চলমান বৈশ্বিক যে পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক সংকট সারা বিশ্বে আজকে যে অস্থিরতা চলছে তার প্রভাব প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশেও পড়বে। কথা হচ্ছে সরকার বিষয়টিকে কিভাবে মোকাবিলা করছে। শেখ হাসিনা ক্রাইসিস ম্যানেজার হিসেবে যথাযথ দায়িত্ব পালন করছেন। দ্রব্যম‚ল্য নিয়ন্ত্রণেও তিনি বিভিন্নভাবে প্রয়াস অব্যাহত রেখেছেন। কোন দেশে দ্রব্যম‚ল্য নিয়ন্ত্রণে এসেছে- এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সিঙ্গাপুরে রুটিন হেলথ চেকআপে গিয়েও আমি দেখেছি, সেখানে জিনিসপত্রের দাম দিগুণ, তিন গুণ বেড়েছে। আমাদের দেশে দ্রব্যম‚ল্য নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা হচ্ছে, সরকার নিস্ক্রীয় নেই। প্রধানমন্ত্রী সারাক্ষণ সংকট মোকাবিলায় সময় দিচ্ছেন। আমাদের কোন অবহেলা নেই। সরকার সব পদক্ষেপ যথাযথভাবে চেষ্টা করছে। গ্যাস, জ্বালানি ও দ্রব্যম‚ল্যের ঊর্ধ্বগতির মুখোমুখি সারা দুনিয়াই। আমেরিকা, ইউরোপ, উন্নত-অনুন্নত বিশ্বে সর্বত্র এই সংকট চলছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে এই সংকটের মধ্যেও বিএনপি নির্বাচনে আসেনি। আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে, নির্বাচন যখন হয়েই যাচ্ছে তখন তারা বলেছিল- বাংলাদেশে নির্বাচনের পর মার্চ মাসে দুর্ভিক্ষ হবে। আমাদের ক্রয় ক্ষমতা আছে। একটা লোকও কি না খেয়ে মারা গেছে? মজুদদার ও সিন্ডিকেট নিয়ে তিনি বলেন, মজুদদারদের খুঁজে বের করা হচ্ছে। কারা কোথায় সমস্যা সৃষ্টি করছে বের হয়ে আসবে। ড. মুহাম্মদ ইউনুস এর সাজা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে নেতিবাচক কোন প্রভাব পড়বে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনুস একজন ব্যক্তি। জানতে চাই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কে? তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। বাংলাদেশের আইন আদালত আছে- যা সবার জন্য সমান। এখানে শ্রমিকরা পাওনা না পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আইন আদালত সব দেশের নিজস্ব ব্যাপার। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, দাবি তো করতেই পারে। দাবির যৌক্তিকতা কতটুকু সেটাও তো আমাদের ভেবে দেখতে হবে। সরকার এখানে উদাসীন নয়। এই বিএনপি এখন বেগম জিয়াকে নিয়ে বড় বড় কথা বলে, সরকারের সমালোচনা করে। কিন্তু বছরের পর বছর তত্ত¡াবধায়কের মামলা নিয়ে আদালতে তারা আইনী লড়াই করেনি, শুধু বিচারকে প্রলম্বিত করেছে। অসুস্থ হলে হাসপাতালে যেতে হবে। আজকে এটা স্বীকার করতেই হবে যে, শেখ হাসিনার উদারতায় খালেদা জিয়া বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে পারছেন।
মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, সাধারণ সম্পাদক জাহানারা বেগম, যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজি সারোয়ার, সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।