বছর ঘুরে আবার শুরু হয়েছে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সিয়াম সাধনার মাস মাহে রমজান। এই একমাস রোজা শেষে হবে, মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ। তাই নতুন জামা-কাপড় তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। রোজার ঈদের মূল আকর্ষণ থাকে জামাকাপড়ে। কে কী ধরণের পোশাক কিনবে বা তৈরি করে নিবে। সেই ভাবনা শুরু হয়ে যায় রোজার প্রথম থেকেই। বিপণি-বিতানগুলোতেও দেখা যায় ভিড়। বিক্রেতারা থান কাপড়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে বছরজুড়ে আলোচিত সিনেমা বা নায়ক নায়িকার নামে নামকরন করে কাপড়ের। শুধু এ কারণেই ওইসব কাপড়ের চাহিদা থাকে বেশি। অনেকেই তৈরি পোশাকের চেয়ে টেইলর থেকে নিজের পছন্দমতো ডিজাইনে পোশাক বানিয়ে পড়তে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
তাছাড়া ঈদে কাপড় কিনে বিশেষ কোনো ডিজাইনের জামা তৈরি করে পরবার আনন্দটাই অন্যরকম।
রোজার ঈদের এই সময়ে টেইলরের দোকানে থাকে প্রচুর কাপড় তৈরির চাপ। তাই যত দ্রæত সম্ভব ঈদের জামা তৈরির জন্য টেইলরের কাছে দিয়ে আসতে পারলে ভালো। নিজের পছন্দের টেইলরের কাছে জামা বানাতে দেওয়ার ইচ্ছা থাকে অনেকের। তবে ঈদের সময় দেখা যায় অতিরিক্ত কাজের চাপে নতুন কাজ আর নিতে চায় না টেইলরা।
লালমাটিয়া মুন টেইলর মাষ্টার রিয়াদুল বলেন, আমারা সবোচ্চ ১৫ রমজান পযন্ত কাপড় নিবো, তাই যারা কাপড় বানাতে চান, তারা এই সময়ের মধ্যেই টেইলরে যাবেন।
ঢাকার নিউমার্কেট, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, প্রিয়াঙ্গন মার্কেট, মৌচাক মার্কেট- এইসব মার্কেটে গজ কাপড়েরও দোকান আছে, টেইলরও আছে। এ ছাড়া এখন অনলাইনেও অনেকে টেইলর পেইজ পাওয়া যায়। সেখানে যোগাযোগ করে পছন্দের পোশাকটি আপনি স্বাচ্ছন্দ্যে তৈরি করে নিতে পারেন।
ঢাকার গাউছিয়া ও চাঁদনী চক মার্কেটে রয়েছে অসংখ্য গজ কাপড়ের দোকান। এছাড়া অল্প দামে সুন্দর কাপড় কেনার জন্য আছে ইসলামপুর মার্কেট।
দেশের সবচেয়ে বড় গজ কাপড়ের বাজার ইসলামপুর। এখানে যে কোনো কাপড় পেয়ে যাবেন বেশ অল্প দামে। ঈদ উপলক্ষে বাজারে হরেক রকমের কাপড়ের কালেকশন এসেছে। যেমন-
সিক্যুয়েন্স ও ডলারের কাজের নতুন কালেকশন এসেছে যার নামকরণ করা হয়েছে পুষ্পা। ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা গজ। বিভিন্ন ডিজাইন ও নানান রংগের কাপড় পাওয়া যাবে
আছে মুঘল আমলের মোটিফে এমব্রয়ডারি করা নেট কাপড়, গজ ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা।
গজ কাপড় কিনতে আসা দুইবোন কাকলি ও শিউলীর সংগে কথা হয়, তারা জানান, আমরা একটু স্বাস্থবান তাই কাপড় সব সময় বানিয়েই পড়ি। টেইলর নিবেন না দেরি করে কাপড় দিলে, সে কারণে রোজার শুরুতেই শপিংয়ে আসা। আমারা কিনেছি, বাহুবলি নামের গজ কাপড়, যার গজ ৩৫০ টাকা। শিউলি নিয়েছেন, সুলতান নামের কাপড়, যার গজ ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। মখমলে এমব্রয়ডারি করা কাপড় প্রতি গজ ৫০০ টাকা। চিকেন কাপডড়ে গজ ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা।মসলিন টিস্যু কাপড়ের গজ ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা।মসলিন প্রিন্টের কাপড় প্রতি গজ ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা।
ঝুল নেট প্রতি গজ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। গোটাপাতি কাপড় প্রতি গজ ৫০০ টাকা। ডেকোট নেট কাপড় প্রতি গজ ৬০০ টাকা। সিকোয়েন্স নেট কাপড় প্রতি গজ ৩০০ টাকা। লিনেন কাপড় প্রতি গজ ১৫০ টাকা। চেরি কাপড়ের গজ ১৮০ টাকা। সামু সিল্ক প্রতি গজ ১৮০ টাকা। লন লিনেন প্রতি গজ ২০০ টাকা। বারিশ জর্জেট প্রতি গজ ২০০ টাকা। কোটা কটন প্রতি গজ ২০০ টাকা। ভেলভেট সিকুয়েন্স প্রতি গজ ৪০০ টাকা। মাল্টি সিকুয়েন্স নেট প্রতি গজ ৪০০ টাকা। এক কালার ভেলভেট প্রতি গজ ৩০০ টাকা। সফট সিল্ক প্রতি গজ ১৫০ টাকা। বাটারফ্লাই প্রতি গজ ৫০ টাকা। ইন্ডিয়ান ক্যানক্যান প্রতি গজ ১৫০ টাকা। দেশি ক্যানক্যান প্রতি গজ ৬০ টাকা।
এ ছাড়া গাউছিয়া মার্কেটের সংলগ্ন সুভাস্তু অ্যারোমা টাওয়ার মার্কেটের সামনে রাস্তার পাশে গড়ে উঠেছে লম্বা এক কাপড়ের বাজার। প্রথমদিকে এখানে শুধু টুকরো কাপড় পাওয়া যেত কিন্তু এখন প্রচুর গজ কাপড় পাওয়া যায়। যারা একটু কম খরচে সাধ্যের মধ্যে নতুন কাপড় কিনতে চান তারা এই বিশাল রোডসাইড গজ কাপড়ের দোকানে ঢুঁ মারতে পারেন। এখানে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিভিন্ন ধরনের গজ কাপড় পেয়ে যাবেন।