spot_img

বিএসএফের গুলিতে বিজিবি সদস্যের মৃত্যু ‘টার্গেট কিলিং’ নয়

গত ২২ জানুয়ারি যশোরের শার্শা উপজেলার ধান্যখোলা বিজিবি সদস্য মো. রইশুদ্দিনের মৃত্যু ‘টার্গেট কিলিং’ নয় বলে জানিয়েছেন বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। শনিবার সকালে ঢাকায় পিলখানায় বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৪তম সীমান্ত সম্মেলনের শেষদিন বিজিবি-বিএসএফ ডিজির যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
বিজিবি সদস্য মো. রইশুদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় সেদিন কী হয়েছিল জানতে চাইলে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) ডিজি নিতিন আগ্রাওয়াল বলেন, ইতোমধ্যে বিষয়টি বিজিবিকে জানানো হয়েছে সেদিন কী ঘটেছিল। আমি এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে চাই না, বিষয়টি অফিসিয়ালি বিজিবিকে অবগত করা হয়েছে।
পরে এ বিষয়ে বিজিবি ডিজি মেজর জেনারেল আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, প্রথমত এটি টার্গেট কিলিং নয়। উভয় দিকের এটা নিয়ে দ্বিধা ছিল। সেদিন অন্ধকার ও ঘনকুয়াশা ছিল। বিএসএফ বিষয়টি অফিসিয়ালি আমাদের জানিয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের দুই পক্ষেরই সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা রয়েছে পোশাকধারী ও সাধারণ নাগরিকদের কারও যেন প্রাণহানির ঘটনা না ঘটে। কোনো প্রাণ যাক, আমরা কেউই চাই না। প্রাণ রক্ষায় আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, সীমান্তে চোরাকারবারীদের হামলায় গত বছর প্রায় ৬০ জন সদস্য আহত হয়েছেন। তারা সাধারণত দা দিয়ে খুব কাছ থেকে বিএসএফ সদস্যদের ওপর আক্রমণ করে। তখন প্রাণ রক্ষায় বিএসএফ সদস্যরা গুলি করে, তারা দেখে না গুলিটা বডির কোন অংশে লাগছে।
বিএসএফ ডিজি নিতিন আগ্রাওয়াল বলেন, সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা হয় না, কিন্তু ক্লোজ রেঞ্জ থেকে প্রাণঘাতি নয়, এমন অস্ত্র দিয়ে গুলি করলেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটতে পারে। ক্লোজ রেঞ্জ থেকে রাবার বুলেট ছুঁড়লে সেটি দিয়েও মৃত্যু হতে পারে। যখন বিবিএসএফ সদস্যদের ওপর চোরাকারবারিরা দা দিয়ে হামলা করে, তখন তারা অনেক কাছে চলে আসে। তখন আত্মরক্ষার্থে বিএসএফ সদস্যরা কখনও গুলি করতে বাধ্য হন। বিএসএফের প্রতিরোধে শুধু বাংলাদেশি নয়, ভারতীয় অপরাধীরাও মারা যায়। এর বাইরেও বিপুল সংখ্যক চোরাকারবারীদের আটক করা হয়। আটককৃতদের বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, সীমান্তে মৃত্যু শূন্যে নামিয়ে আনতে। এজন্য জয়েন্ট বর্ডার প্যাট্রলিং, ইন্টেলিজেন্স শেয়ারিংসহ নানা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
পাঁচ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর ডিজি পর্যায়ের সম্মেলনে বিজিবি ডিজি মেজর জেনারেল আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী সীমান্ত হত্যার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এটিকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিএসএফ মহাপরিচালকের প্রতি আহবান জানান। সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে অধিক সতর্কতামূলক ও কার্যকরী উদ্যোগ হিসেবে সীমান্তে যৌথটহল পরিচালনা জোরদার করার ব্যাপারে উভয় পক্ষ সম্মত হয়।
বিজিবি মহাপরিচালক ‘কানেক্টেড বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় তিন বিঘা করিডর হয়ে দহগ্রামে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক স্থাপনের জন্য বিএসএফ মহাপরিচালককে অনুরোধ জানান। বিএসএফ ডিজি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সীমান্ত সম্মেলনে।
উল্লেখ্য, ঢাকায় ৫-৯ মার্চ বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ১৬ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেছে। বিএসএফ মহাপরিচালক নিতিন আগ্রাওয়ালের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছে।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,100SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ