ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে র্যাব। এ সময় ৭০ জনকে আটক করা হয়। পরে যাচাই-বাছাই শেষে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত ৫৮ জনকে বিভিন্ন মোয়াদে কারাদন্ড দিয়ে কেরাণীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায়। র্যাব জানায়, কারাদন্ডপ্রাপ্ত ৫৮ জন দালাল চক্রের সদস্য। তারা নানান ভাবে ঢামেকে চিকিৎসা নিতে আসা অসহায় রোগীদের জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নিত। চক্রের সঙ্গে জড়িত হিসেবে হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও বেশকিছু স্টাফের নাম র্যাবের হাতে এসেছে। ঢামেকে প্রায় দুইশো দালাল রয়েছে, যারা প্রতিনিয়ত রোগীদের জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নেয়। গতকাল সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেলের বিভিন্ন ওয়ার্ডে, বহর্বিভাগে অভিযান চালিয়ে এসব দালালদের আটক করে র্যাব-৩ এর সদস্যরা।
এ বিষয়ে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে ঢামেক রোগীদের জিম্মি করে যে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এ পর্যন্ত ৭০ জনের মতো দালাল সন্দেহে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে এদের মধ্যে ৫৮ জনকে দালাল হিসেবে চিহ্নিত করে ১৫ থেকে এক মাস করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দিয়েছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। কারাদন্ডপ্রাপ্তরা বিভিন্ন ওয়ার্ড, জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ ও বøাড ব্যাংকে রোগীদেরকে জিম্মি করতো। আবার মেডিকেলের ভিতরে অসহায় রোগীদেরকে জিম্মি করে সিট পাইয়ে দেয়ার জন্য লেনদেন করতো।
লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, ঢাকা মেডিকেলে দেড়শো থেকে দুইশো দালাল আছে। এখানকার বøাড ব্যাংকে ভবঘুরে, মাদকাসক্ত ও ছিনতাইকারীদের রাতের বেলা এনে রক্ত সংগ্রহ ও বিক্রি করতো এই দালাল চক্র। এক প্রশ্নের জবাবে আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, দালালের বিরুদ্ধে শূণ্য সহিষ্ণু নীতি অনুসরণ করছি। একদিন অভিযানেই যে দালাল মুক্ত হবে তা না। এখানে প্রায় দেড়শো থেকে দু শ দালাল রয়েছে। তাদের বিভন্ন মোয়াদে সাজা দেয়া হচ্ছে। আবার দেখবেন সাজা শেষ করে এসে এই পেশাতেই যুক্ত হচ্ছে। অভিযান চলমান রাখতে, তা না হলে কোন মেডিকেল কলেজই দালাল মুক্ত করা যাবে না।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক জানান, হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও বেশকিছু স্টাফদের নাম আমরা পেয়েছি। তাদের বিষয়ে ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। হাসপাতালের যে আইন রয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে। দালাল চক্রের সঙ্গে কোনো চিকিৎসক জড়িত কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো চিকিৎসকের জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি।