নরসিংদী রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে সাবেক স্বামী খলিলুর রহমান খলিলের সঙ্গে আগুনে দগ্ধ হওয়া চিকিৎসক লতা আক্তারও (৩২) মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। চিকিৎসক লতার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন (আরএস) ডা. তরিকুল ইসলাম।
এর আগে গত সোমবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান লতার সাবেক স্বামী খলিল রহমান।
লতার পরিবারের অভিযোগ, গত ২৫ ফেব্রয়ারি নরসিংদী রায়পুরায় লতাদের বাসায় প্রবেশ করেন সাবেক স্বামী খলিল। এরপর ঘরের দরজা আটকে লতার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পেট্রোল ঢেলে আগুন তিনি নিজের গায়েও আগুন ধরান।
দরজা ভেঙে তাদের উদ্ধার করে দগ্ধ অবস্থায় লতাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করানো হয়। অন্যদিকে খলিল ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
লতার পরিবারের ভাষ্য, খলিলুর পেশায় গাড়িচালক ছিলেন। প্রেম ও বিয়ের সময় পেশার কথা গোপন করেছিলেন খলিলুর। বিয়ের পর তা জানতে পেরে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটান লতা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে লতার গায়ে তিনি আগুন ধরিয়ে দেন। নিজের গায়েও আগুন ধরিয়ে দেন খলিল।
নিহত লতার খালু মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, রাজধানীর শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন লতা। তিনি নারায়ণগঞ্জে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, দুই বছর আগে খলিলুর রহমান নামে এক ছেলেকে প্রেম করে বিয়ে করেন লতা। বিয়ের কিছুদিন পর জানতে পারেন ওই ছেলে একজন গাড়িচালক। প্রতারনা করে বিয়ে করায় তাদের তালাক হয়। এর জেরে বাসায় এসে লতার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেন খলিলুর।
চিকিৎসক লতা আক্তারের চাচা ফারুক মোবাইল ফোনে বলেন, লতার মরদেহ হাসপাতালের কাজ করে বাড়িতে আনা হয়েছে। তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য,ঘটনার পর ২৭ ফেব্রæয়ারি লতাকে দেখতে হাসপাতালে যান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তখন তিনি বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত কষ্টদায়ক, হৃদয়বিদারক ও দুঃখজনক। এমন ঘটনায় আসলে কেউই লাভবান হয় না, শুধু নিজেদেরই ক্ষতি হয়। পেট্রোলের আগুনে পুড়ে যাওয়া আমাদের এই চিকিৎসকের প্রায় ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে। এ অবস্থায় তাকে সুস্থ করা বেশ কঠিন।