‘স্মার্ট পুলিশ স্মার্ট দেশ, শান্তি প্রগতির বাংলাদেশ’- এই শ্লোগানকে মূল প্রতিবাদ্য বিষয় ধরেমঙ্গলবার থেকে শুরু হবে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৪। এবারের পুলিশ সপ্তাহ উদযাপিত হবে ছয় দিনব্যাপী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে প্রথম দিন আজ সকাল সাড়ে ১০টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন। তিনি পুলিশের বিভিন্ন কন্টিনজেন্ট ও পতাকাবাহী দলের নয়নাভিরাম, সুশৃঙ্খল ও দৃষ্টিনন্দন প্যারেড পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করবেন। পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামলূক ভাষণ দিবেন। এরপর বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) স্টল পরিদর্শন করবেন। তিনি পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে কল্যাণ প্যারেডেও ভাষণ দিবেন। বর্ণাঢ্য আয়োজন আর বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এবারের পুলিশ সপ্তাহ শেষ হবে ৩ মার্চ।
পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
এবার পুলিশ সপ্তাহের বার্ষিক পুলিশ প্যারেডে প্যারেড কমান্ডার হিসেবে নেতৃত্ব দিবেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিসি মোঃ সোহেল রানা। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন কন্টিনজেন্টের পুলিশ সদস্যরা প্যারেডে অংশ নেবেন।
পুলিশ সপ্তাহ ২০২৪ উপলক্ষে গত ১ ডিসেম্বর ২০২২ থেকে গত ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ৩৫ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)’, ৬০ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)’ এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামলূক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ৯৫ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা’ এবং ২১০ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা’ পদক প্রদান করা হবে। মোট ৪০০ পুলিশ সদস্য পদকপ্রাপ্ত হবেন। প্রধানমন্ত্রী পদকপ্রাপ্তদের পদক পরিয়ে দিবেন। তবে পদকপ্রাপ্তদের তালিকা নিয়ে পুলিশ বিভাগের বিভিন্ন স্তরের সদস্যদের মধ্যে অস্বস্থির সৃষ্টি হয়েছে। পদকপ্রাপ্তদের ৯০ ভাগ সদস্যই এএসপি থেকে তদুর্দ্ধো পদমর্যাদার কর্মকর্তা। মাঠ পর্যায়ের কনষ্টেবল, এএসআই, এসআই ও ইন্সপেক্টর পদের পুলিশ সদস্যরা পদক পেয়েছেন অনেক কম।
পুলিশ সপ্তাহের উল্লেখযোগ্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারগণের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতির ভাষণ, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারগণের উদ্দেশ্যে ভাষণ, ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারগণের সঙ্গে প্রধান বিচারপতি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীবর্গ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং আইজিপির সম্মেলন, আইজি’জ ব্যাজ, শিল্ড প্যারেড, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার পুরস্কার বিতরণ। এছাড়া, পুলিশ সপ্তাহের বিভিন্ন কর্মঅধিবেশনে বিগত এক বছরের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে পরবর্তী বছরের কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হবে।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমান সরকার পুলিশ বাহিনীকে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী, দক্ষ ও জনবান্ধব বাহিনীতে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ফলে পুলিশ সদস্যদের কার্যক্রমে এসেছে গতিশীলতা এবং কর্মচাঞ্চল্য। পুলিশের জনবল বৃদ্ধি, সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তির সংযোজন, যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিশেষায়িত নতুন নতুন ইউনিট গঠনসহ বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।